শনিবার (২৫ অক্টোবর) দৌলতপুর এলাকার কচুরিপানায় ভরা একটি পুকুর পরিস্কার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন হয়। এ কাজে সহযোগিতা করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন, পাশাপাশি অংশ নেয় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং পরিবেশ অধিদপ্তর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের ছয়টি শহরকে ‘স্বাস্থ্যকর নগরী’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র শহর খুলনা এবং এটি এশিয়ারও একমাত্র শহর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য উন্মুক্ত জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, গত এক দশকে খুলনা মহানগরী থেকে হারিয়ে গেছে দুই হাজারেরও বেশি পুকুর। বর্তমানে নগরীতে অবশিষ্ট মাত্র ১৭১টি পুকুর, যার অধিকাংশই কচুরিপানা ও আবর্জনায় ভরা।
ডব্লিউএইচও’র খুলনা প্রতিনিধি আসিফ আহমেদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর নগরী গড়তে উন্মুক্ত জলাশয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দিন দিন পুকুরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আজ যে পুকুরটি পরিষ্কার করা হচ্ছে, সেটিকে আমরা মডেল হিসেবে সংরক্ষণ করছি। আশা করি সিটি করপোরেশন এই উদ্যোগ অনুসরণ করবে।’
আরও পড়ুন: খুলনা নগরীতে সড়কের ডিভাইডার নিয়ে ভাঙা-গড়ার খেলা
বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘খুলনায় থাকা ১৭১টি পুকুরের বেশিরভাগই ব্যবহার অনুপযোগী। কচুরিপানা ও আবর্জনায় ভরা এসব পুকুর সংরক্ষণে সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত উদ্যোগ নিতে হবে, না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।’
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘উন্মুক্ত জলাশয় কমে যাওয়ার কারণে খুলনার আবহাওয়া পরিবর্তিত হচ্ছে। গত ১০ বছরে শহরের গড় তাপমাত্রা বছরে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় পুকুর সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পুকুর ভরাট আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও আইন বাস্তবায়নে আমাদের সক্ষমতা সীমিত। তারপরও যেখানে এমন খবর পাই, ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি এবং সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উদ্যোগে খুলনায় জলাশয় সংরক্ষণে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। নাগরিক সমাজ মনে করছে, ধারাবাহিকভাবে এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে খুলনা আবারও জলাশয় ও সবুজে ভরা একটি স্বাস্থ্যকর নগরী হিসেবে তার হারানো রূপ ফিরে পাবে।
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৭







Bengali (BD) ·
English (US) ·