এক মা অনবরত কাঁদছিলেন ছেলের ছবি দেখে। দীর্ঘ বারো বছর দেখা হয় না তাদের। তবুও ছেলেকে কাছে পেতে হাল ছাড়েননি সিরিয়ার হাকাসা শহরের অসহায় ওই মা। বাশার আল-আসাদের পতনের পর সেদনায়া কারাগারে থাকা শত শত বন্দির ছবি প্রকাশ করা হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এর মধ্যে রয়েছে তারফাহ দাউদ নামে ওই মায়ের ছেলে বাসিলের ছবিও।
ছেলের সঙ্গে সেদনায়া কারাগারে গিয়ে দেখা করার জন্য অনেক টাকাও খরচ করেছেন তারফাহ। তবে ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি বাসিলের।
অসহায় ওই মা বলেন, ‘এতোদিন আমরা তার সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। ২০১৫ সালে একজন বিদেশি সাংবাদিক সেদনায়ার বন্দিদের ছবি তুলেছিলেন। সেখান থেকে আমরা তার কথা জানতে পারি যে, আমাদের ছেলে সেদনায়া কারাগারে আছে।’
আরও পড়ুন: দামেস্কের কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারের ফটক খুলে দেয়া হয়েছে, দাবি বিদ্রোহীদের
এদিকে, ৩২ বছর পর নিজ ছেলের সঙ্গে দেখা হলো এক বাবার। বাশারের পতনের পর যেন তার বাড়ি ফেরার স্বপ্ন সত্যি হলো। লেবাননে নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেন সুহেল হামউয়ি নামে ওই ব্যক্তি। ১৯৯২ সালের ঈদের দিন তাকে কিছু মানুষ আটক করে নিয়ে যায়। এরপর নিখোঁজ ছিলেন বহু বছর। পরিবারের কাছে আবার ফেরত যেতে পারবেন সে আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য ব্যাপার যে আমি ছাড়া পেয়েছি। এটি চমৎকার একটি বিষয়; কারণ এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হওয়া প্রায় অসম্ভব ছিলো। গেলো ডিসেম্বর আট এর আগে স্বপ্ন দেখাও যেন নিষিদ্ধ ছিলো।’
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিদ্রোহীদের ঝড়ো হামলার মুখে পালিয়েছেন ২৪ বছর ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার পতনের পরপরই খুলে ফেলা হয় কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারের ফটক। সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে যান হাজার হাজার বন্দি।
আরও পড়ুন: আসাদের গোপন বন্দিশালায় তল্লাশি, ১৫ মরদেহ উদ্ধার
জানা যায়, সেদনায়াসহ আসাদের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ছিলেন ১ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, শুধুমাত্র সেদনায়া কারাগারেই আটক ছিলেন ২০ হাজার মানুষ।
]]>