স্ত্রীকে জমি লিখে দিয়ে ঘরছাড়া বৃদ্ধ ব্যবসায়ী!

৫ দিন আগে
বাগেরহাটের ফকিরহাটে নিজের কষ্টার্জিত জমি স্ত্রীকে দলিল করে দিয়ে বিপাকে পড়েছেন মো. আবুল বাশার নামের এক ব্যবসায়ী। স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে ও জামাতার অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়ে আজ পথে পথে ঘুরছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি স্ত্রীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও তুলেছেন এই বৃদ্ধ। জমি ফেরত এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে তিনি বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

আবুল বাশার ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের লখপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সোহবানের ছেলে।

 

ভুক্তভোগী আবুল বাশার জানান, সারাজীবন কষ্ট করে তিনি লখপুর গ্রামে সাড়ে ১২ শতক জমি ক্রয় করেন এবং সেখানে বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। একমাত্র মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সুখের সংসার ছিল। কিন্তু ২০১২ সালের ২৭ মে স্ত্রী কৌশলে তার কাছ থেকে বাড়িসহ জমি দানপত্র দলিল করে নেন। পরে লখপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মেয়ের জন্য একটি দোকানও ক্রয় করেন তিনি।

 

২০১৯-২০ সালের দিকে স্ত্রী নাসরিন বেগম, মেয়ে নুসরাত তামান্না ও জামাতা সেনা সদস্য আবু ইউসুফ তার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। বাড়িভাড়া তুলতেও বাধা দেয়া হয়। জমি ফেরত চাইলে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।

 

তিনি অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে স্ত্রী ও জামাতা কয়েকজন সহযোগী নিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ধাক্কাধাক্কি করে ঘর থেকে বের করে দেয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে তারা বসতবাড়ির প্রধান ফটকে ডাবল তালা মেরে চলে যায়। পরদিন ২৮ নভেম্বর ফকিরহাট মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।

 

আরও পড়ুন: ‘হেল্প হেল্প’ বলে দৌড়ে গিয়ে শিক্ষকের গলায় ছুরি চালাল ছাত্রী!

 

আবুল বাশার আরও বলেন, ‘সব থাকতেও আমি এখন বাড়ি ছাড়া। স্ত্রী ও মেয়ে খারাপ ব্যবহার করে, বাড়ি গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। জামাইও বিভিন্ন লোক দিয়ে ফোনে হুমকি দিচ্ছে। আমি জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি। যেকোনো মূল্যে আমার জমি ফেরত চাই এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।’

 

লখপুর গ্রামের জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আবুল বাশার কষ্ট করে জমি কিনে বাড়ি করেছেন। কিন্তু স্ত্রীকে লিখে দিয়ে এখন চরম বিপদে আছেন। তিনি এখন পথে পথে ঘুরছেন। আমরা চাই আইনগত ও সামাজিকভাবে তাকে জমি ফেরত দেয়া হোক, যেন তিনি স্ত্রীকে নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারেন।’

 

অন্য এক স্থানীয় মো. আওলাতুল বলেন, ‘নিজের জমি-বাড়ি থেকেও আজ বৃদ্ধ বয়সে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন আবুল বাশার। এটা অন্যায়। স্ত্রী, মেয়ে, জামাই এবং সমাজের সবার উচিত তাকে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া। না হলে তিনি রাস্তায় পড়ে মরবেন।’

 

এ বিষয়ে আবুল বাশারের মেয়ে নুসরাত তাসনিম তামান্না বলেন, ‘আমরা চাই না বাবা-মা আলাদা থাকুক। জমি মায়ের নামে হলেও ভোগদখল করেন বাবা। আর আমার নামে যে দোকান কিনে দিয়েছিলেন, তা আমি বাবাকে ফেরত দিয়েছি।’

 

আবুল বাশারের স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন, ‘আমি স্বামীকে বারবার বুঝিয়েছি, একসাথে থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি মানুষের কথায় প্ররোচিত হয়ে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমি যদি জমি ফেরত দিই, তবে আমার জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না। তাই আমি জমি লিখে দেব না।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন