স্কুল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের আমানত কমছে কেন?

৩ সপ্তাহ আগে
এক বছর ধরে স্কুল ব্যাংকিং থেকে সরে আসছে শিক্ষার্থীরা। এতে গত আগস্ট পর্যন্ত ১২ মাসে আমানত কমেছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। অভিভাবকরা বলছেন, ঊর্ধ্বমুখী সংসার খরচ আর কোচিং বাবদ বাড়তি ব্যয়ের কারণেই সঞ্চয় করা যাচ্ছে না। এজন্য অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী পদক্ষেপের অভাবও দায়ী বলে মনে করেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। যদিও খুদে সঞ্চয়কারীদের উদ্বুদ্ধ করতে স্কুলে স্কুলে ব্যাংকের শাখা খোলাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শিক্ষার্থীদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা হাতে-কলমে শেখাতে ২০১০ সালে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রথম বছর মাত্র ২৯ হাজার ৮০টি স্কুল অ্যাকাউন্ট খোলা হলেও লাগাতার বেড়ে গত আগস্টে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৬ লাখে। তবে কমছে আমানত।

 

গত আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের আগস্টে স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানতেরর স্থিতি ছিল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। পরের বছর তা বাড়ে ৩০.২০ শতাংশ। আরও সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়ে ২০২৩ সালে দাঁড়ায় ২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকায়। আরও ২.২৩ শতাংশ বাড়ে পরের বছর।

 

আরও পড়ুন: সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা, মূল্যায়নের পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার

 

তবে এরপর পরই পড়ে ছন্দপতনে। এক বছরে ৪.৩৪ শতাংশ কমে ২০২৫ সালের আগস্ট শেষে স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানতের স্থিতি নেমেছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৩২৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকায়।

 

স্কুল ব্যাংকিংয়ে এমন মন্দ দশার কারণ হিসেবে ঊর্ধ্বমুখী সংসার খরচের সঙ্গে কোচিংয়ের বাড়তি ব্যয়কে সামনে আনছেন অভিভাবকরা। তারা বলছেন, খরচ বাড়ায় সঞ্চয়ের টাকা ভেঙে খরচ করতে হচ্ছে। নতুন সঞ্চয় হবে কোথা থেকে!

 

পারিবারিক ব্যয়ের বিপরীতে আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী পদক্ষেপের অভাবকে দায়ী করছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক মাঈনুদ্দিন বলেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ের মনোভাব তৈরি করা। তবে তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তাদের ফিনান্সিয়ালি লিটারেসি বা আর্থিক জ্ঞানের ওপর গুরুত্ব দেয়া। স্কুলে ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা শিখবে কীভাবে চেক ব্যবহার করতে হয়, কীভাবে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে হয়।

 

বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ফিনান্সিয়ালি লিটারেসির গুরুত্ব বোঝানো অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে সঞ্চয়ের বিষয়গুলো শেখালে তারা সঞ্চয়ে উৎসাহিত হবে।

 

আরও পড়ুন: স্কুল ব্যাংকিং নিয়ে নতুন যে নিদর্শনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, স্কুলগুলোতে ব্যাংক শাখার সুবিধা দেয়াসহ ভবিষ্যতে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

 

উল্লেখ্য, মাত্র ১০০ টাকা আমানত রেখে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা খুলতে পারেন স্কুল ব্যাংকিংয়ের হিসাব। যেখানে রয়েছে সব ধরনের ফি ও চার্জের ক্ষেত্রে রেয়াত সুবিধাসহ বিনামূল্যে অনলাইন ব্যাংকিং ও স্বল্প খরচে ডেবিট কার্ড পাওয়ার সুযোগ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন