মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত আনুমানিক ১১টার দিকে রিয়াদের মালাজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফুড ডেলিভারির কাজ করতে গিয়ে কামরুলের মোটরসাইকেল একটি মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সৌদিতে নিহতের কাছাকাছি অবস্থানরত ষোলদানা এলাকার প্রবাসী মানিক হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো গতকাল মঙ্গলবারও কামরুল ভাই ফুড ডেলিভারি নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বড় একটি পণ্যবাহী ট্রাকের নিচে চলে যান তিনি। এতে তার একটি পা ভেঙে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
বর্তমানে মরদেহ মালাজ কেয়ার মেডিকেল সেন্টারের হিমাগারে রাখা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের চাচা রাজু তপদার জানান, এলাকাবাসীর কাছে কামরুল ‘কামু’ নামেই পরিচিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কামুর সঙ্গে আমার বন্ধুত্বও ছিল। বয়সে সমান, একই ক্লাসে পড়েছি, খেলাধুলা করেছি, আড্ডা দিয়েছি সবই একসঙ্গে। তার এমন মৃত্যু সত্যিই সহ্য করা কঠিন।’
আরও পড়ুন: ইতালি পৌঁছার একদিন পরই বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু
তিনি আরও জানান, তিন ভাইবোনের মধ্যে কামরুল ছিলেন সবার ছোট। ২০২১ সালে বিয়ে করার পর বছরখানেকের মধ্যে প্রবাসে যান তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফিরে দুই মাস অবস্থান করেছিলেন। সে সময় তার বাবা মারা যান। প্রায় তিন মাস আগে তিনি আবার সৌদি আরবে ফেরত যান। তার দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
কামরুল হাসানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে খাজুরিয়া গ্রামসহ পুরো গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং রাজনৈতিক ভিন্নমত নির্বিশেষে সবার কাছে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দেশে থাকাকালে ক্রীড়াঙ্গন ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ছিলেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে সদাহাস্যজ্বল, নিরহংকার ও ভালো মনের মানুষ হিসেবে স্মরণ করছেন। প্রবাসী সহকর্মীরা জানিয়েছেন, সৌদি আরব থেকেও তিনি সুযোগ পেলেই এলাকার মানুষের সঙ্গে দেখা করতেন এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। কিন্তু অকাল প্রয়াণে এলাকায় গভীর শোক নেমে এসেছে।
]]>