সুন্দরবনে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণে বন বিভাগের উদ্যোগ

১ সপ্তাহে আগে
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ।

বন কর্মকর্তারা জানান, সমুদ্রের জোয়ারে ভেসে আসা এসব প্লাস্টিক শুধু বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নষ্ট করছে না, ক্ষতি করছে বনের প্রাণী, পরিবেশের ভারসাম্য ও মানবদেহেরও।

 

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “পূর্ব বিভাগে যোগদানের পর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, সমুদ্রতীরবর্তী বনসংলগ্ন স্থানে প্রচুর প্লাস্টিক বর্জ্য জমে আছে। এরপর থেকেই সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখার উদ্যোগ নিই।”

 

তিনি আরও জানান, প্রতি মাসের প্রথম তিন দিনের যেকোনো একদিন বনরক্ষীরা বনের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের কাজ করবে। প্রয়োজনে শ্রমিক নিয়োগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সুন্দরবনের ডিমের চর ও কচিখালী বীচ এলাকায় বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

 

রেজাউল করিম বলেন, “সংগ্রহ করা বর্জ্য খুলনায় নিয়ে পুনর্ব্যবহারের (রিসাইকেল) ব্যবস্থা করা হবে। এতে একদিকে বন পরিচ্ছন্ন থাকবে, অন্যদিকে পরিবেশও সুরক্ষিত থাকবে। আমাদের এই কার্যক্রম নিয়মিত ও অব্যাহত থাকবে।”

 

আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক ১

 

বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে স্থানীয় জনগণ, পরিবেশবাদী সংগঠন ও পর্যটকদের সহযোগিতা অপরিহার্য। সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী বনকে দূষণমুক্ত রাখার প্রচেষ্টা চলবে।

 

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’-এর চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “প্লাস্টিক বর্জ্য মানবদেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এটি সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি। এসব বর্জ্য মাছের শরীরে প্রবেশ করলে এবং সেই মাছ মানুষ খেলে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।”

 

তিনি আরও বলেন, “সামুদ্রিক জাহাজগুলো থেকে বিপুল পরিমাণে বর্জ্য ফেলার ফলে তা সমুদ্রপথে ভেসে সুন্দরবন ও উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছায়। এতে জলজ প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই জাহাজের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোর মনিটরিং ও পর্যটকবাহী নৌযানে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।”

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন