তবে নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন তাদের অনেকেই কিভাবে এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোন ক্যাটাগরিতে কাজ করবেন সেটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। ফলে না জেনেই কোনো একটি কাজ শুরু করে শেষে হতাশ হয়ে ফ্রিল্যান্সিং থেকে দূরে সরে যান।
মূলত ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি কাজ যেখানে কোনও ব্যক্তি নিজের কাজ করতে অন্যদের বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে কোনও নির্দিষ্ট প্রকল্পে যোগদান করে এবং নির্দিষ্ট মূল্যের বিনিময়ে তারা সেবা প্রদান করে। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, কাজের পরিমাণ ও সময় নির্ধারণ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন যেভাবে
ফ্রিল্যান্সিং সাধারণত অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে হয় এবং এটি আপনাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাজ করার সুযোগ দেয়। চলুন জেনে নেয়া যাক ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের জনপ্রিয় ৫টি কাজ সম্পর্কে-
ডাটা এন্ট্রি
ফ্রিল্যান্সিং জগতের সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর একটি হলো ডাটা এন্ট্রি। এই কাজটি অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং কাজের তুলনায় একটু সহজ হওয়ায় নতুন ফ্রিল্যান্সারের পছন্দের তালিকায় এটি প্রথম।
ডাটা এন্ট্রির কাজে মাইক্রোসফট এক্সেল, ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সফটওয়্যারে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। ছবি: সংগৃহীত
তবে ডাটা এন্ট্রির কাজ সহজ হলেও এই কাজেও কিছু বিষয়ে দক্ষতা থাকতে হবে। বিভিন্ন টুলের ব্যবহার জানা ছাড়াও টাইপিং স্পিডে ভালো হতে হবে। মাইক্রোসফট এক্সেল, ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সফটওয়্যারে দক্ষতার প্রয়োজন।
মূলত যারা সামান্য দক্ষতা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে চান তাদের জন্য ডাটা এন্ট্রির কাজ ভালো হবে। তবে এই সেক্টরে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক বেশি। ফলে নতুনদের জন্য প্রথমদিকে কাজ পাওয়াটা একটু কঠিন।
কন্টেন্ট রাইটিং
ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলোর মধ্যে কন্টেন্ট রাইটিং বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাপী এর প্রচুর চাহিদা থাকায় যারা লিখতে পছন্দ করেন বা যাদের এই বিষয়ে ভালো দক্ষতা আছে তারা লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিংয়ে বেশি আয় করতে চাইলে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
বিভিন্ন অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একজন ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস প্রদান করে সাবলম্বী হওয়া সম্ভব। তবে সারা বিশ্বে ইংরেজি কন্টেন্টের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকায় বেশি আয় করতে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।
আরও পড়ুন: ফ্রিল্যান্সারদের ইনসেন্টিভ বাড়ানোর ব্যবস্থা করছে সরকার: ফয়েজ আহমদ
তাছাড়া কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরে বিভিন্ন ক্যাটাগরি বা কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। এগুলো হলো- ওয়েবসাইট কন্টেন্ট রাইটিং, আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট রাইটিং, ক্রিয়েটিভ বা কপিরাইটিং ইত্যাদি। এসবের যেকোনো একটি ক্যাটাগরির কাজ বেছে নিয়ে সহজেই নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
ট্রান্সক্রিপশন
যারা ভাষান্তর কাজে পারদর্শী তাঁদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে ট্রান্সক্রিপশনে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে।
বর্তমানে ট্রান্সক্রিপশনে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত
নতুন করে যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, তারা ভাষান্তর কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। ইংরেজি, আরবি, রুশ, মান্দারিন, ফ্রেঞ্চসহ যত বেশি ভাষা জানবেন, তত বেশি আয় করতে পারবেন।
এছাড়া বাংলা ভাষার অডিও বা ভিডিও শুনে প্রতিলিপি তৈরি করেও মাসে আয় করতে পারেন সম্মানজনক পারিশ্রমিক।
ডিজিটাল মার্কেটিং
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজগুলোর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অন্যতম। অনলাইনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ ছাড়া কল্পনা করা যায় না।
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বা বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের অনলাইন বা অফলাইন ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার দিয়ে অনলাইনে নিজেদের প্রচারণার কাজ করে থাকে, যার ফলে দিনের পর দিন এই কাজের চাহিদা বেড়েই চলেছে।
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বা বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
তবে ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে শুধু একটি কাজকে বুঝায় না। এটি অনেক বড় একটি সেক্টর। আর এই সেক্টরে আবার অনেকগুলো ক্যাটাগরি বা কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যেকোনো একটি কাজের উপর ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব। তাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যেকোনো এক বা একাধিক কাজের ওপর দক্ষতা অর্জন করে চোখ বন্ধ করেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্যারিয়ার শুরু করা যায়।
আরও পড়ুন: সফল ফ্রিল্যান্সার হতে ভুলেও করবেন না যেসব কাজ
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জনপ্রিয় কিছু কাজ হলো- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, ভিডিও, ইমেইল বা কন্টেন্ট মার্কেটিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ইত্যাদি।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
বর্তমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সারা বিশ্বে এমন অনেক ব্যক্তি বা সংস্থা রয়েছে যাদের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় বা জ্ঞান থাকেনা।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজাররা সাধারণত প্রতি ঘন্টায় ২০-২৫ ডলাট বা তার বেশি চার্জ নিয়ে থাকেন। ছবি: সংগৃহীত
তাই তারা অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে পেইড মার্কেটিং বা ক্যাম্পেইন ম্যানেজমেন্ট, নিয়মিত পোস্টিং, কনটেন্ট রাইটিংসহ বেশ কিছু কাজ করার জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এক্সপার্টদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
যাদের ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার দক্ষতা রয়েছে, পাশাপাশি মাল্টি-টাস্কিংয়ের মানসিকতা রয়েছে তারা চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য এই সেক্টরটি বেছে নিতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজাররা সাধারণত প্রতি ঘন্টায় ২০-২৫ ডলার বা তার বেশি চার্জ নিয়ে থাকেন।
সূত্র: শিখতে পারো, এমএসবি অ্যাকাডেমি
]]>
২ ঘন্টা আগে
১







Bengali (BD) ·
English (US) ·