অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই ইমরান শাহীন চৌধুরী ওই গ্রামের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে কর্মরত এবং অন্যরা স্থানীয়।
এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ইমামের পক্ষে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন সংগঠনের চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আনাছ আমিনী। মসজিদের জনপ্রিয় একজন ইমামকে চাকরি ছাড়ার এমন হুমকি দেয়ায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের মাঝে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত আড়াই বছর ওই মসজিদে খতিব ও পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা আব্দুল আউয়াল। সম্প্রতি মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী, সদস্য ফিরোজ গংরা ইমামকে মসজিদ থেকে চলে গিয়ে অন্য স্থানে চাকরি খোঁজার কথা বলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ইমাম শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশনকে জানালে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থনা করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরকারী শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন সংগঠনের চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আনাছ আমিনী জানান, ইমামের বিষয়ে আমাদেরও জানানোর পর আমরা বিষয়টি তদন্ত করেছি। আমাদের কাঝে তদন্তকালে মনে হয়েছে ইমামের কোনো ত্রুটি নেই। এর আগে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পূর্বে ইমামের বয়ানে সুদ-ঘুষ, বেপর্দা হারাম উপার্জনের বিরুদ্ধে আলোচনা করার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিসহ কমিটির অন্যরা। তাদের সঙ্গে কথা বললে তারাও ইমামের কোনো দোষত্রুটি দেখাতে পারেননি। এই মসিজদ থেকে ইতিপূর্বে আরও কয়েকজন ইমামকে চাকুরি ছেড়ে যেতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে জাহাজে কেন একে একে ৭ জনকে হত্যা করেন ইরফান?
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই মসজিদের মুসুল্লি মো. নিশান, রিপন চোধুরীসহ আরও অনেকেই বলেন, হুজুরের প্রকৃতপক্ষে কোনো দোষ নেই, হুজুর সুদ-ঘুষ ও হারামের বিরুদ্ধে কথা বলেছে এটাই হুজুরের দোষ।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই মসজিদের আরো কয়েকজন মুসুল্লি বলেন, মসজিদ কমিটির সদস্য ফিরোজ গংরা ইতঃপূর্বে আরও কয়েকজন ইমামকে তারা অন্যায়ভাবে মসজিদ থেকে চাকরিচ্যুত করেছে। তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই হুজুরদের বিদায় করে দেয়া হয়।
এদিকে ওই মসজিদ থেকে অনেক আগে চাকুরিচ্যুত হওয়া সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম, মো. আইয়ুব আলী, মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা যখন ওই মসজিদে তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। তখনি আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তবে মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইমাম আব্দুল আউয়ালের কোনো দোষ নেই, তবে উনাকে চলে যেতে বলেছি কারণ, আমরা মসজিদে দুজন নতুন হুজুর নিয়োগ দেবো।
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত তাদের দুই পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।