রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তোরণের চেষ্টার মধ্যেই শুরু হয়েছিল ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর। তবে প্রথম দিকে তেমন একটা সাড়া পাওয়া না গেলেও মেলার দ্বিতীয় শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০টায় গেট খোলার পরপরই মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। তারা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখার পাশাপাশি কেনাকাটা করছেন। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে গৃহস্থালি জিনিসপত্র, শীতের পোশাক, কাপড় ও খাবারের দোকানগুলোতে। তবে তুলনামূলক কম ভিড় রয়েছে ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্রের স্টল-প্যাভিলিয়নে।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য মেলায় ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি!
ক্রেতারা বলছেন, মেলা প্রাঙ্গণ দূরে হওয়ায় ছুটির দিন বাদে অন্য দিনগুলোতে আসা কষ্টকর। তবে মেলা প্রাঙ্গণ বেশ গোছানো। পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই চলাচল করা যাচ্ছে। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বেশি।
আর ব্যবসায়ীরা জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই ভিড় বাড়ছে। তবে বেচাকেনা এখনও আশানুরূপ নয়। বেলা বাড়লে ক্রেতা সমাগম আরও বাড়বে। তখন জমজমাট হবে বেচাকেনাও।
মেলা মাসব্যাপী সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজন করা হতো। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা আয়োজন করা হয়নি। আর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য মেলা ২০২৫: ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকৃষ্টে নেয়া হয়েছে যেসব উদ্যোগ
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিশ্বের ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে করা হয়েছে জুলাই চত্বর, ছত্রিশ চত্বর ও তারুণ্যের প্যাভিলিয়ন। ই-টিকিটের ব্যবস্থা থাকায় প্রবেশ পথে রয়েছে ভিন্ন ব্যবস্থা।
প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।
মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে রয়েছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় রয়েছে শিশু পার্কও।
]]>