সম্প্রতি কামরাঙ্গীরচরে এক শিশুকে অপহরণের ঘটনায় ফয়সাল ও কাকলী দম্পতিকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য দেয় পুলিশ। জানা গেছে, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের বাসায় ১৯ অক্টোবর আব্দুল হাদি নূর নামের চার বছর বয়সি শিশু খেলছিল। পাশেই ঘুমিয়েছিল তার মা। ঘুম ভাঙলে দেখেন আদরের সন্তান পাশে নেই।
পাশের সাবলেটে থাকা দম্পতিও নিখোঁজ। ফোন করলে শিশুটি ওই দম্পতির কাছে আছে বলে জানান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ফোন বন্ধ। শিশুটিকে নিয়ে পালানোর দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরায়। পরিবারের সদস্যরা জানান, শিশুটিকে সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সাবলেটে থাকা দম্পতি জানায় শিশুটি তাদের কাছে রয়েছে। নানা টালবাহনায় সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। মোবাইল বন্ধ করে দেয়; ব্লক করা হয় মোবাইল নম্বরও।
আরও পড়ুন: ভিকারুননিসার ছাত্রীকে অপহরণ-ধর্ষণ: একজনের যাবজ্জীবন
পরে শিশুর মায়ের ইমো নম্বরে ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানানো হয় নূরকে অপহরণ করা হয়েছে। ফিরে পেতে দিতে হবে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ। নূরের মা সময় সংবাদকে বলেন, অপহরণকারীরা ইমোতে ম্যাসেজে কথা বলছিল, কিন্তু ফোর ধরছিল না। তারা ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে, না হলে ছেলেকে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়।
কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠানো হয় অপহরণকারীদের কাছে। অবশেষে পুলিশের সাহায্য চায় পরিবার। দুই দিন ধরে চেষ্টার পর তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে অপহৃতের অবস্থান মিরপুরে শনাক্ত করা হয়। এরপর ক্লাসিক আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে মো. পারভেজ ও কাকলী আক্তার দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
এই দম্পতি ১৫ দিন আগে শিশুটির বাসায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া ওঠে। এরপর তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরে ঘটনার দিন শিশুর মায়ের ঘুমের সুযোগ নিয়ে চিপসের প্রলোভনে অপহরণ করে।
ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, অপহরণকারীরা পরিকল্পিতভাবে সাবলেট বাসা ভাড়া নিয়েছিল। সেখানে ফ্লোরিং করে থাকত। পরে সুযোগ বুঝে শিশুটিকে অপহরণ করে।
আরও পড়ুন: পল্লবীতে নারী অপহরণ-ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার
পুলিশ বলছে, এরা আবাসিক হোটেলে ভাড়া থাকেন। পড়ে সাবলেট হিসেবে উঠে অপহরণ করে সেই হোটেলে আটকে মুক্তিপণ আদায় করেন। মুক্তিপণ আদায় করতে না পারলে শিশু বিক্রি করে দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ তদন্তের পাশাপাশি মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে তারা জড়িত কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, অপহরণকারীদের কাছে ১৫-২০টি সিম পাওয়া গেছে। এগুলোর একটিও তাদের রেগুলার ব্যবহারের সিম নয়। তারা মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ ধরনের বিপদের হাত থেকে বাঁচতে সাবলেট দেয়ার আগে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান পুলিশের।
]]>
৪ সপ্তাহ আগে
৮







Bengali (BD) ·
English (US) ·