ফলে প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়ায় অতিরিক্ত খরচের সঙ্গে বেড়েছে লাগামহীন ভোগান্তি। তবে জেলা রেজিস্টার জানিয়েছেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ে এই সংকট কাটিয়ে উঠবেন বলে তিনি জানান।
জামালপুর সদর উপজেলায় ৫ মাস ধরে সাব- রেজিস্ট্রার না থাকায় অন্য উপজেলা থেকে সপ্তাহে ২ - ৩ দিন করে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একই অবস্থা ইসলামপুর এবং মেলান্দহ উপজেলায়। এতে দুরদূরান্ত থেকে আসা বার বার অফিসে আসা-যাওয়ায় অতিরিক্ত অর্থের অপচয়ের সঙ্গে বেড়েছে সেবা গ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি।
জামালপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসে মাসে ২ থেকে আড়াই হাজার দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে মাসে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়।
আরও পড়ুন: জামালপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার
ভোক্তভোগীরা বলেছেন, দূর থেকে দলিল করতে এসে ২/৩ দিন সময় লাগে। এতে অতিরিক্ত খরচ হয়। এ ছাড়া তাদের দলিল সিরিয়াল ম্যান্টেন নিয়েও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দির ৬৫ বছরের স্বপন মিয়া ৩ দিন ধরে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছে না। সকালে এসে সন্ধ্যায় ফিরে যেতে হচ্ছে। অন্য উপজেলা থেকে অতিরিক্ত দায়িত্বে সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে ৩ দিন আসেন। দলিলের চাপ বেশি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন আসা যাওয়া খাওয়া ধাওয়ায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক দূরের পথ আসতে অনেক কষ্ট হয়। সাথে ৫/৭ জন লোক আসে।
মেহেরুল হাসান বলেন, ‘অসুস্থ বাবাকে নিয়ে এসেছি। সিরিয়াল ঠিক হচ্ছে না। আমি ১৭ জনের পরে সিরিয়াল দিছি। সকাল থেকে বসে আছি। বাবাকে নিয়ে কোথাও যেতেও পারছি না। সরকারের কাছে দাবি করছি যেন ভালো একজন লোক দেন।’
জামালপুর সদর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আলহাজ মো. জাহিদুল হক সেলিম বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রার বেশি কিছুদিন যাবত চলে গেছে। স্থায়ী সাব-রেজিস্ট্রার না থাকার কারণে দলিল করতে আসা সাধারণ করতে জনগণ সুন্দরভাবে দলিল করবে সেই পরিবেশ নেই। সিরিয়ালভাবে দলিল হচ্ছে না। একেক অফিস থেকে সাব রেজিস্ট্রার এসে একেক রকম নিয়মে কানুনে দলিল রেজিস্ট্রি করছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে আছি। আজ এসে একজন এরকম আইন,কাল একজন এসে আরেক আইন এতে নানা রকমের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: জামালপুরে নাশকতার মামলায় ৪ আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
তিনি বলেন, সদর অফিসে যে পরিমাণ দলিল করতে আসে অন্য কোনো অফিসে এভাবে এত লোক যায় না।
জেলা রেজিস্ট্রার মো. আসাদুল ইসলাম বলেছেন, ৩ টি অফিসে স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার না থাকার ফলে দলিল করার ক্ষেত্রে ঝামেলা ও ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানানো হয়েছে। আগামী বদলী আদেশে স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার পাব।
জামালপুরে ২০২৪ -২৫ অর্থ বছরে জেলার ৭ উপজেলায় সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১৯ কোটি ১৫ লক্ষ ২৬১ টাকা।
]]>