সাফারি পার্ক থেকে দুর্লভ প্রাণী চুরির ঘটনায় পরিবেশ উপদেষ্টার উদ্বেগ

১ সপ্তাহে আগে
সুন্দর বনাঞ্চল, জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এমন ধারণা নিয়েই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। প্রাণী চুরি, অরক্ষিত নিরাপত্তা বেষ্টনী আর নানা অনিয়মের অভিযোগে সরগরম গাজীপুরের সাফারি পার্ক।

এমন বাস্তবতায় পরিদর্শনে এসে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, গাজীপুরে সাফারি পার্ক থেকে একের পর এক দুর্লভ প্রাণী চুরি হচ্ছে। এর পেছনে একটিসংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র রয়েছে।


গেল মাসে কড়া নিরাপত্তার মাঝেও এখান থেকেই চুরি হলো বিলুপ্তপ্রায় তিনটি আফ্রিকান লেমুর। এ ঘটনার পর থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে সাফারি পার্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমন বাস্তবতায় বুধবার সাফারি পার্ক পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ঘুরে দেখেন ৩৬৯০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই পার্ক।

আরও পড়ুন: ভাগাড়ে কোনোভাবেই ময়লা পোড়ানো যাবে না: রিজওয়ানা

পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমে কথা বলেন উপদেষ্টা। একের পর এক প্রাণী চুরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র দুর্লভ প্রাণীগুলোকে টার্গেট করেছে। শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের খুঁজে বের করার কথাও জানান তিনি।

 

উপদেষ্টা বলেন, ‘এভাবে দুর্লভ প্রাণীগুলো কীভাবে চুরি হলো এটি খুঁজে বের করতে হবে। আমি মনে করি এখানে যারা দায়িত্বে আছেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, ঘটনার আগে ও পরে তাদের ভূমিকা দেখতে হবে। একই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন কেন এসব স্থান সিসিটিভির আওতায় আনা হয়নি, সিসি ক্যামেরা কেন কাজ করেনি?’


এসব ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা। বলেন, ‘আপনি যখন ঘটনার ১৪ দিন পর মামলা করবেন তখন তো আর এসব হারিয়ে যাওয়া প্রাণী ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। এছাড়াও আজ একটি বিষয় প্রমাণিত একটি সংঘবদ্ধ চক্র আছে যারা বাংলাদেশকে বন্যপ্রাণী পাচারের রোড হিসেবে ব্যবহার করেন।’


সাফারি পার্কের মূল পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বনজ প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার। প্রয়োজনে সহায়তা নেয়া হবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন: আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

রিজওনা হাসান আরও বলেন, ‘সাফারি পার্ক আর চিড়িয়াখানা এক নয়। সাফারি পার্কে দর্শনার্থীরা প্রাণীকে দেখবে প্রাণীকে ভালোবাসবে। এখানে প্রাণীগুলো যতটুকু সম্ভব প্রাকৃতিক পরিবেশে রাখা হয়। তবে এ পার্কে হাতিশালা, জাগুয়ার বেষ্টনী ও লেমুর বেস্টনীগুলোতে সে উপযুক্ত পরিবেশ রাখা হয়নি। কেন বারবার এমন ঘটনা ঘটছে, বিলুপ্ত যে সব বন্যপ্রাণী এখানে এনে আমরা রাখছি সে সব হারিয়ে যাচ্ছে। এটি খুঁজে বের করতে হবে। একই জায়গা থেকে যখন টিয়া পাখি, ময়না পাখি হারায় না, লেমুর হারিয়ে যায় তখন আপনাকে বুঝতে হবে এখানে একটি সমস্যা আছে। সে সমস্যাটি চিহ্নিত করতে হবে। সাফারি পার্কের পুরোটাই সুরক্ষিত করতে হবে। এখানে সিসিটিভি রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় দেখা গেছে, যেদিন অপরাধ ঘটে সেদিন সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করে না। এজন্য মনিটরিংটা নিশ্চিত করতে হবে।’


এর আগে ২০২৪ সালে দুর্লভ দুটি ম্যাকাও পাখি চুরি ও চলতি বছরের শুরুতে একটি নীলগাই পালিয়ে গেছে এই সাফারি পার্ক থেকে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন