বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব হলরুমে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘সচিবালয়ে যে আমলারা ছিল খুনি হাসিনা ওইসব চেয়ারে বসিয়ে রেখেছিল, সেটির প্রমাণ গতকালের আগুন। চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব ও মামলা বাণিজ্যের জন্য জুলাই-আগষ্টের গণ-অভ্যুত্থানে এত মানুষ প্রাণ দেইনি।’
আরও পড়ুন: সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড সাধারণ কোনো দুর্ঘটনা না: সারজিস আলম
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা বাণিজ্য হচ্ছে। মামলায় নাম না দেয়ার জন্য একবার টাকা নেয়া হয়, আর মামলা থেকে নাম কাটানোর জন্য আরেকবার টাকা নেয়া হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে চাঁদাবাজি শুরু হয়ে গেছে। বড় বড় ব্যবসায়ীদের রাতের বেলায় বাসায় ডেকে আনা হয়, ওখান থেকেই টাকার পরিমাণ ঠিক করা হয়। এগুলোর জন্য তো এত মানুষ জীবন দেয়নি। যেভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য ও দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে, এভাবে যদি চলতে থাকে মনে করব এ গণ-অভ্যুত্থানকে পুঁজি করে টিস্যুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি শক্তি। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে সমুন্নত রাখতে জাতীয় নাগরিক কমিটি কাজ করবে। জাতীয় নাগরিক কমিটির কাজ হলো লিডার তৈরি করা। আগামীর বাংলাদেশে কীভাবে আরো পরিচর্যা করা যায় সেই কাজটাই জাতীয় নাগরিক কমিটি সে তার জায়গা থেকে করবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এর আগে সাংবাদিকরা চাইলেও সত্য প্রকাশ করতে পারেনি। এখন সত্য বলার দিন আসছে, কিন্তু এখনও যদি আমরা কুক্ষিগত হয়ে যাই, এ সুযোগ বারবার আসবে না। সাংবাদিকরা যদি সত্য তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে কোনো জায়গায় কোনোভাবে হুমকি বা হয়রানির শিকার হন তাহলে আমাদের জানাবেন, আমরা এক হয়ে লড়ব।’
আরও পড়ুন: সাবধান করার সময় আর নাই, তিন উপদেষ্টাকে সারজিসের বার্তা
সারজিস আলম বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠুভাবে হয়নি। তাই আমরা চাই আগামী নির্বাচন যেন শেখ হাসিনা মার্কা নির্বাচন না হয়, সেজন্য সংস্কার প্রয়োজন। তবে সংস্কার একটি সময়সীমার মধ্যে করতে হবে। সংস্কার করতে গিয়ে নির্বাচনের সময় যাতে ফুরিয়ে না যায়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্যাতিত হয়েছে, জেলে গেছে। তবে নির্বাচনের আগে প্রত্যেকটি রাজনীতি দলকে সময় দেওয়া উচিত, যাতে তারা দল গুছিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারে।’