সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা: মামুনুল হক

১ সপ্তাহে আগে
সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গীর ইজতেমার ময়দানে হত্যাকাণ্ড ও দেশব্যাপী ইসকনের ‘আস্ফালন’ একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের ১৫ বছর পূর্তিতে যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

 

মামুনুল হক বলেন, ‘দেশের স্বার্থবিরোধী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী গোষ্ঠী পালালেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাংলাদেশ আজ দুভাগে বিভক্ত, এক ভাগে ভিনদেশি দালাল, আরেক দিকে দেশপ্রেমিক জনতা। ভিনদেশি চক্র পনেরোটি বছর এক সেবাদাসীকে দিয়ে বাংলাদেশকে জিম্মি করে রেখেছিল। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর তারা সেই ক্রীতদাসীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে একের পর এক নতুন ষড়যন্ত্র করছে। সচিবালয়ে অগ্নিসংযোগ তারই একটি অংশ।’

 

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগুন দিয়ে তোমরা বাংলাদেশের কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে পার, কিন্তু হাজারো মানুষের মনে তোমাদের ব্যাপারে যে ঘৃণা জন্মেছে তা মুছে ফেলতে পারবে না। এর আগে ইসকনকে দিয়ে বাংলাদেশ ধ্বংসের চেষ্টা প্রকাশ পেয়েছে সাইফুল ইসলাম আরিফের হত্যার মধ্য দিয়ে। টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যারা রাতের গভীরে ঘুমিয়ে থাকা নিরীহ মুসল্লিদের ওপর হত্যা ও হামলা চালিয়েছে, তারা তাবলিগের সাথী নয়; তারা খুনি ও ভিনদেশি শক্তির অংশ। তাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সব দোসরকে রুখে দিতে দেশপ্রেমিক যুবকদের কাজে লাগাতে হবে।’

 

আরও পড়ুন: সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবি মামুনুল হকের

 

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে মামুনুল হক বলেন, ‘দেশবিরোধী শক্তিদের স্পেস দিলে আপনাদের স্পেস কমে যাবে। আপনাদের হাতে সময় সীমিত। এ সময় যথাযথভাবে কাজে লাগান।’

 

ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আর কোনো ফেলানিকে কাঁটাতারে ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না। সীমান্ত রক্ষাকারীদের কোনো লাশ দেখতে চাই না।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো বাকশাল দেখতে চাই না। আমরা ছাত্র জনতার অধিকার আদায় করতে চাই। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আন্দোলন ও সংগ্রামের জন্য যখন কোনো ভূখণ্ড তৈরি হয়ে যায় তখন তা দমিয়ে রাখা যায় না। আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিল বিভাজনের রাজনীতি। কিন্তু চব্বিশে স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্ররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেই বিভাজন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

 

বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মানুষ আজ অর্থনৈতিক সংকটে। তারা আর মেগা পরিকল্পনার দেখতে চায় না। আজ বাংলাদেশের মানুষ ব্যাংকে যায় কিন্তু তারা চেক দেখিয়ে টাকা পায় না। পলায়নকারী স্বৈরাচারের দোসররা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। তাদের টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

 

সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমীরে মজলিস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী। সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রকাশনা বিভাগের সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম ও মজলিসে শূরা খাসের সদস্য মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ মাহমুদের যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কুরবান আলী, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা শরাফত হুসাইন, মাওলানা মাহবুবুল হক, মাওলানা তোফাজ্জল হুসাইন মিয়াজী, সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা অ্যাডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নেছারউদ্দীন, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমানও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন।

 

আরও পড়ুন: বিশ্ব দরবারে আমাদের ঐক্য তুলে ধরতে হবে: মামুনুল হক

 

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার শিক্ষা সচিব মাওলানা আশরাফুজ্জামান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আবু সাইদ নোমান, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা আব্দুস সুবহান, বিশিষ্ট আলেমে দীন মাওলানা মামুনুর রশিদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও বায়তুল মাল বিভাগের সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ বিভাগের সম্পাদক মাওলানা শরীফ হুসাইন, মজলিস শূরা খাসের সদস্য ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জাহিদুজ্জামান, মজলিস শূরা খাসের সদস্য মাওলানা কারী হুসাইন আহমদ, হাফেজ শহীদুল ইসলাম, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল আশিকুর রহমান জাকারিয়া প্রমুখ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন