শেষ মুহূর্তে খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে ঈদ আর বৈসাবির কেনাকাটা

৩ সপ্তাহ আগে
হাতে সময় কম। আর মাত্র একদিন। তারপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত চাঁদের দেখা। এরপরই পবিত্র ঈদুল ফিতর । তাই দেশজুড়ে চলছে ঈদুল ফিতরের প্রস্তুতি। তাই শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিপণিবিতান থেকে শুরু করে সব ধরনের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমজমাট হয়ে উঠছে জেলা শহরের কসমেটিকস থেকে শুরু করে তৈরি পোশাক-পাঞ্জাবি-টুপি ও জুতার দোকানগুলো। আবার এর পরপরই পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি আর বাংলা বর্ষবরণ। আর সেই উৎসবের কেনা কাটার ধুম পড়েছে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন বিপণিবিতান গুলোতে।


ভিড় বাড়ছে বাজারে ও বৈসাবি মেলাগুলোতে। গ্রাম থেকে শহরে কেনা কাটা করতে আসছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ মনের মতো পোশাক বানাতে ছুটছেন দর্জির দোকান ও বাড়িতে। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই জমজমাট হয়ে উঠছে উৎসবের বাজার। ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ করতে নিজের সাধ্যের মধ্যে পরিবারের সবার জন্য নতুন কিছু কেনার ইচ্ছে থেকেই ক্রেতারা মার্কেটে ভিড় করছেন। কেউ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা-গয়না কিনছেন। কেউ আবার শেষ মুহূর্তের উপার্জনটুকু দিয়ে পরিবারকে খুশি করতে কেনাকাটা করছেন।

আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে জমজমাট খুলনার ঈদবাজার; পাকিস্তানি পোশাকে ঝুকছেন তরুণীরা

শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে খাগড়াছড়ি বাজার ঘুরে দেখা যায়, তৈরি পোশাক সব নারীর পছন্দের তালিকায় থাকলেও থান কাপড়ের দোকানে পাহাড়ি তরুণীদের ভিড়। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের মার্কেট, শপিংমল, ফ্যাশন হাউস ও বিপণিবিতানগুলো ক্রেতা সমাগমে মুখর হয়ে ওঠে। বাহারি নতুন ডিজাইনের পোশাকের পসরা সাজিয়ে দোকানিরা ক্রেতা আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। তবে দেশি পোশাকের চেয়ে এবারো ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। এছাড়া পাকিস্তানি থ্রি-পিসেরও চাহিদা রয়েছে। তবে উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদের আকৃষ্ট করে এমন নাম নিয়ে এবারো বাজারে এসেছে বিভিন্ন পোশাক। যেমন, পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান থ্রি-পিস, বুটিক থ্রি-পিস, সারারা, গারারা ও আফগান  ড্রেস। শাড়ি প্রেমীদের কাছে ‘জামদানি শাড়ি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, নতুন ফারসি, রাজগুরু, বুটিকসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির চাহিদা রয়েছে। সেলাই করা থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকার মধ্যে। সেলাই বিহীন থ্রি-পিসের দাম ৪০০ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। 


বৈসাবি ও ঈদের কেনা কাটার বাজাওে সুতি ও নেট কাপড়ের প্রচুর চাহিদার পাশা পাশি লিনেন, জর্জেট, কাতান কাপড়ও ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানান দোকানিরা।


জেলার সেলিম ট্রেড সেন্টারের মর্ডান ফ্যাসনের  স্বত্বাধিকারী মো. আশরাফ বলেন, তৈরি পোশাকের উপরে চাহিদা একটু বেশি থাকে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের। তবে এবছর মেয়েদের নতুন পোশাকের মধ্যে রয়েছে ফরাসি, পাকিস্তানি ও  ইন্ডিয়ান থ্রি-পিসের চাহিদা। তবে দামটা একটু বেশি।তবে গতবারের তুলনায় এবার চাপ বেশি। তবে প্রথম দিকে একটু কম থাকলেও শেষের দিকে বেড়েছে।


পানখাইয়া পাড়ায় এক কাপড়ের দোকানে কথা হয় মহালছড়ি থেকে আসা আনাই মারমা, চিংমেপ্রু মারমা, মিতালি মারমা ও নুনুপ্রু মারমার সাঙ্গে। 

আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার

তারা বলেন, ১৬জন সমবয়সী মিলে প্রতিবছরের মতো এবারও সাংগ্রাই উৎসবে একই ডিজাইনের নেট আর সুতির গজ কাপড়ের থামি সেলাই করবেন। দুই দিন ধওে তারা বাজার ঘুরেও বৃহস্পতিবার বিকেলে পানখাইয়া পাড়ার এক দোকানে এসে তাঁরা পছন্দেও কাপড় কিনেছেন। তাদের একই রঙের কাপড় মেলাতে যেমন কষ্ট হয়েছে, তেমনি দামও বেশি দিতে হবে।


বাঘাইছড়ি থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে কেনা কাটা করতে আসা শিক্ষিকা রেশমি চাকমা। তিনি বলেন, কাপড় পছন্দ হচ্ছে, তবে দাম বেশি। বিশেষ করে বাচ্চাদেও জিনিস পত্রে এত দাম বেড়ে গেছে যে বাজেটের বাইরে। অথচ এক মাস আগেও এমন দাম ছিলনা। শোরুম গুলোরও একই অবস্থা।অবশেষে মহাজন পাড়াসূর্য শিখা ক্লাবে আয়োজিত বিজু মেলা থেকে শুধুমাত্র বাচ্চাদেও জন্য কেনা কাটা করেছি। 


খাগড়াছড়ি বাজারের শাড়ি, থ্রি-পিস ও থান কাপড়ের দোকান আমন্ত্রণ ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. কাহ আলম বলেন, সারা বছর বৈসাবি আর ঈদের অপেক্ষায় থাকি। সারা বছরের বিক্রি এই দুটো উৎসবে হয়ে থাকে। থ্রি-পিচের চেয়ে থান কাপড় বিক্রি হচ্ছে বেশি। এখনও পর্যন্ত পাহাড়ি ক্রেতার সংখ্যা বেশি। ঈদ উপলক্ষে ভালোই বিক্রি হয়েছে আশা করছি ঈদ শেষে বৈসাবি ও নববর্ষেও বিক্রি আরো বাড়বে।


শহরের শালবন এলাকার রোমানা আক্তার নামে এক গৃহবধূ সন্তানদের নিয়ে বাজার করতে এসেছেন সেলিম মার্কেটে। 


তিনি একই কথা বলেন, আগের তুলনায় পোশাকের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ তবে পোশাকের মান বাড়েনি। তবুও সবার জন্য নতুন পোশাক নিচ্ছি দামাদামি করে।


খাগড়াপুর এলাকার শোরুম সাম্পারি ক্র্যাফটে স্বত্বাধিকরি শাপলা দেবী ত্রিপুরা বলেন, এই বছর বৈসাবি ও ঈদ উপলক্ষে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে পাহাড়ি নারীরা পিনোন- হাদি ও রিনাই-রিচাই কিনছেন আর বাঙালিরা কিনছেন সালোয়ার-কামিজ এবং শাড়ি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন