প্রধান পর্যটন কেন্দ্র আলুটিলা ছাড়াও জেলা পরিষদ পার্কসহ বিভিন্ন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে। পর্যটকরা মুগ্ধ হচ্ছেন ঢেউ খেলানি পাহাড় ও ঘনকুয়াশাছন্ন প্রকৃতি দেখে। এছাড়া পর্যটকদের জন্য বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। পাহাড়ে শীতের তীব্রতা উপভোগ ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে খাগড়াছড়ির বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক ও স্থানীয়রা ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেকসহ সবকটি বিনোদন কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: ডুবে গেল ২০২৪’র শেষ সূর্য
খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র ও জেলা পরিষদ র্পাককে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যাপক সংখ্যক পর্যটক ভিড় করছেন। পরিবার নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ সবাই। তা ছাড়া শীতে পাহাড়ের প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যই আলাদা। ঘন কুয়াশায় পাহাড়ে এক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা নাজনীন আরা, ফেরদৌসী বেগম ও নাজমুল হাসান জানান, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পট, সবখানেই এখন পর্যটকের ভিড়। আলুটিলা, রহস্যময় গুহা ও জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কসহ সব পর্যটকে পরিপূর্ণ। তাছাড়া বছরের শেষ, স্কুল কলেজে চলছে শীতকালীন ছুটি আর পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো সবকিছু মিলিয়ে পর্যটক বাড়ছে খাগড়াছড়িতে। তার মধ্যে রাঙ্গামাটির সাজেক যেতে হলে খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হয়, তাই যারা রাঙ্গামাটির সাজেকে ঘুরতে যান, তারা খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্যও উপভোগ করে যান।
যশোর থেকে খাগড়াছড়িতে ঘুরতে আসা পর্যটক মো. আমিন, তাবাসুম, সুমাইয়া কবীর ও জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদের আর্কষণ করে, বিশেষ করে নির্মল বাতাস, মুক্ত হাওয়া যেটা শহরের পাওয়া যায় না। অনেকে কাছে সাজেক থেকেও খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন ও হর্টিকালচার পার্ক তাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। বিশেষ করে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে উপভোগ করা খাগড়াছড়ি শহরের মনোরম দৃশ্য আর আঁকাবাঁকাভাবে বয়ে যাওয়া চেঙ্গী নদী, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার মজুমদার জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। যা গত ৬ মাস দেশের ও স্থানীয় রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকদের আগমন ঘটছে। এর সংখ্যা বাড়ায় ব্যবসাও ভালো হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতে। তাছাড়া এবারে বাড়তি চাপ সামলাতেও সতর্ক রয়েছে পর্যটন কর্পোরেশন।
এদিকে পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, খাগড়াছড়িতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে বলেছেন, পর্যটক আসতে তাদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলেছেন, ছুটি ছাড়াও অনেক পর্যটক আসছেন। এতে তাদের রেভিনিউও বাড়ছে। তারা আশা করছেন জানুয়ারি পুরো মাসটা পর্যটকদের ভিড় থাকবে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো।
আরও পড়ুন: সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখতে কুয়াকাটায় বাড়ছে পর্যটকের ভিড়
খাগড়াছড়িতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের প্রস্তুতির কথা বলছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আযুব।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন। নিরাপত্তার পাশাপাশি পর্যটকদের যে কোনো সমস্যায় প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি জানান, খাগড়াছড়ির আলুটিলা ও জেলা পরিষদ পার্কসহ সবকটি পর্যটককেন্দ্রে প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ হাজারের মতো পর্যটকের সমাগম হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।