মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দ সিরাজ জিন্নাত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. লতিফ কাজী (৩৮) সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের বার্থা গ্রামের মৃত মতিয়ার কাজীর ছেলে এবং তার স্ত্রী বিউটি বেগম (৩০) মহিষবাথান গ্রামের বিল্লাল মোল্লার মেয়ে। লতিফ ও বিউটি দম্পতির ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ে ও ছয় বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে লতিফ কাজী ও বিউটি বেগমের বিয়ে হয়। এ দম্পতির মিম নামে ১৩ বছর বয়সী মেয়ে ও মুসা নামে ছয় বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। সাংসারিক তুচ্ছ বিষয় নিয়ে লতিফ কাজী তার স্ত্রী বিউটিকে প্রায়ই মারধর করতো।
২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে বিউটি ও লতিফ তাদের ছেলে মুসাকে নিয়ে ঘরের এক রুমে শুয়ে পড়েন। আর মেয়ে মিম পাশের রুমে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এসময় বিউটি ও লতিফের মধ্যে সাংসারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এ ঝগড়ার জের ধরে রাত আড়াইটার দিকে লতিফ স্ত্রী বিউটির বুকের ওপর উঠে বসে ধারালো ছুরি দিয়ে তার মাথায় কোপাতে থাকে। বিউটি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের দুটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাম হাতের কব্জির ওপর থেকে কনুই পর্যন্ত গুরুতর জখম হয়।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা!
এ সময় বিউটির চিৎকারে পাশের রুম থেকে তার মেয়ে মিম দৌড়ে এসে এ দৃশ্য দেখে লতিফকে বলে 'বাবা তুমি আমার মাকে মেরো না'। মেয়ের কথা না শুনে লতিফ মেয়ের সামনেই তার স্ত্রীর মাথায়, কপালে ও গলায় কুপিয়ে হত্যা করে। মেয়ে মিম ঠেকাতে গেলে লতিফের ছুরির আঘাতে মিমের ডান হাতের তালুতে কেটে গুরুতর জখম হয়। এসময় মিম চিৎকার করলে লতিফ দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি বিউটি বেগমের বাবা বিল্লাল মোল্লা বাদী হয়ে লতিফ কাজীর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আসামি আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। আবার তাদের মেয়ে এই মামলায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছে। ফলে আজ আদালত যে রায় দিয়েছেন আমরা অনেক খুশি। বাদীপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।’