‘শিশু ও বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করো’–ফাইনালে উয়েফার ব্যানার প্রদর্শণ

২ দিন আগে
‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে খ্যাত সুলেমান-আল-ওবেইদ দক্ষিণ গাজায় মানবিক সহায়তার অপেক্ষা করার সময় ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনায় উয়েফা শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছিল। কিন্তু, মৃদু শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে গিয়ে উল্টো ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফিলিস্তিনি ফুটবলারের মৃত্যুর পরিস্থিতি উল্লেখ করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মিশরীয় তারকা মোহামেদ সালাহ।

অতঃপর গতকাল (বুধবার) রাতে ইতালির উদিনে পিএসজি বনাম টটেনহ্যাম হটস্পারের মধ্যকার সুপার কাপের ফাইনাল ম্যাচ শুরুর আগে বিশেষ ব্যানার প্রদর্শণ করেছে উয়েফা। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সেই ব্যানারে লেখা ছিল–‘শিশু হত্যা বন্ধ করো। বেসামরিক হত্যা বন্ধ করো’। ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইউক্রেন ও ইরাক থেকে আসা নয়জন শিশু শরণার্থী খেলা শুরুর আগে মাঠে প্রবেশ করে ব্যানারটি বহন করে।


‘বার্তাটি জোরালো ও স্পষ্ট। একটি ব্যানার, একটি আহ্বান।’  বুধবার এক্সে (পূর্বে টুইটার) এক পোস্টে জানায় ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।


গত সপ্তাহে দক্ষিণ গাজায় ফিলিস্তিন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সুলেমান-আল-ওবেইদ ইসরাইলি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারানোর পর শোক প্রকাশ করতে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ার পর এবার সরাসরি যুদ্ধবিরোধী অবস্থান নিল উয়েফা।


আরও পড়ুন: হামজার গোলে লিড পাওয়া লেস্টার টাইব্রেকারে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ল


আল-ওবেইদের মৃত্যুর পর এক্সে দেওয়া সংক্ষিপ্ত পোস্টে উয়েফা তাকে বর্ণনা করেছিল, ‘একজন প্রতিভা, যিনি অন্ধকারতম সময়েও অসংখ্য শিশুকে আশা জুগিয়েছেন।’ উয়েফার এমন ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ অবস্থানের প্রেক্ষিতে লিভারপুলের মিশরীয় তারকা সালাহ উয়েফার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘আপনারা কি বলতে পারেন তিনি কীভাবে, কোথায়, এবং কেন মারা গেছেন?’


এর পরপরই আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফুটবল প্যালেস্টাইন-এর প্রতিষ্ঠাতা বাসিল মিকদাদি বলেছিন, তিনি মনে করেন না যে সমালোচনার জবাব দেবে উয়েফা। তিনি বলেন, ‘উয়েফা কোনো ফলো-আপ দেয়নি, আর সত্যি বলতে আমি অবাক হব যদি তারা দেয়।’ গাজার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফুটবল ও খেলোয়াড় সংগঠনগুলোর ‘সম্পূর্ণ নীরবতা’র  সমালোচনা করেন তিনি।  


মিকদাদি জানান, এমনকি আল-ওবেইদের প্রতি উয়েফার শ্রদ্ধা নিবেদনও কিছুটা ‘অবাক করার মতো ছিল। ‘সুলাইমান আল-ওবেইদ এই গণহত্যায় নিহত প্রথম ফিলিস্তিনি ফুটবলার নন। এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মারা গেছেন, তবে এখন পর্যন্ত তিনি সবচেয়ে খ্যাতনামা।’–তিনি যোগ করেন।


 

Two Palestinian refugee children are taking part in the medal ceremony alongside UEFA President Aleksander Čeferin at the 2025 UEFA Super Cup following an invitation from the @UEFA_Foundation for Children. pic.twitter.com/YWE4vOppTL

— UEFA (@UEFA) August 13, 2025


সালাহ, যিনি প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা তারকা, প্রায় দুই বছর ধরে চলমান এই যুদ্ধে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে, সালাহর পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ৩৩ বছর বয়সী এই মিসরীয় খেলোয়াড় এত দেরিতে ইসরায়েলের গণহত্যা-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন?


আরও পড়ুন: ১০ মিনিটের ঝড়ে টটেনহ্যামের শিরোপা কেড়ে নিল পিএসজি


শিশুদের সহায়তায় কাজ করা উয়েফা ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন তাদের নতুন উদ্যোগের ঘোষণা দেয়ার একদিনের মাথায় উয়েফার এই ব্যানার প্রদর্শনের ঘটনা ঘটল। যুদ্ধপ্রভাবিত শিশুদের সহায়তার জন্য মেডসাঁ দ্য মন্ড (বিশ্ব চিকিৎসক সংস্থা), ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (ফরাসি সংক্ষিপ্ত রূপ এমএসএফ) এবং হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে সংস্থাটি।


উয়েফা জানিয়েছে, এসব সংস্থা 'গাজার শিশুদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা দিচ্ছে।


সংস্থাটি আফগানিস্তান, লেবানন, সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইউক্রেনে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলের শিশুদের সহায়তায়ও প্রকল্প পরিচালনা করেছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন