রোববার (১১ মে) বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল জেলার এয়ারপোর্ট থানা এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইমরান দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিল এবং বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছিল যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে যেতে পারে।
পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আহমেদ মাইনুল হাসান বলেন, পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের একাধিক টিম ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে আসছিল। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে, যাতে ভিকটিম পরিবার ন্যায়বিচার পায়।
এর আগে, গত ৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুমকি থানার ওসি (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম তিনজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পটুয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। অভিযুক্তরা হলেন- শাকিব মুন্সি, সিফাত মুন্সি এবং ইমরান মুন্সি।
শাকিব ও সিফাতকে আগেই যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভিকটিম লামিয়া আক্তার ছিলেন ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত আন্দোলনকর্মী জসিম হাওলাদারের একমাত্র মেয়ে।
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি ফেরার পথে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার রাজগঞ্জ গ্রামে তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে তিন যুবক। পরদিন, ১৯ মার্চ, লামিয়া নিজেই বাদী হয়ে দুমকি থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে শিশু গৃহকর্মী ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা গ্রেফতার
মামলার তদন্তে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান মুন্সির সংশ্লিষ্টতার তথ্য উঠে আসে। এরপর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।
ধর্ষণের এক মাস পর ২৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
শহীদ কন্যার মৃত্যুর খবরে সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তার মা রুমা বেগম। ওই রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে রুমা বেগমের মানসিক চিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ভিকটিমের পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীরা দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছেন।