জামে মসজিদের নামের অর্থ নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিকরা বিশ্বাস করেন, বিশ্ব ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য ছিল সম্রাট শাহজাহানের। এর প্রকৃত নাম ছিল মসজিদ-ই-জাহান-নুমা। এর বাংলা করলে দাঁড়ায় বিশ্বে প্রতিফলিত হওয়া মসজিদ।
মোগল সম্রাট শাহজাহানের উদ্যোগে ১৬৪৪ থেকে ১৬৫৬ সালের মধ্যে দিল্লির জামে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শাহাজানাবাদের সবচেয়ে উঁচু স্থানে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির নকশা করেন স্থপতি উস্তব খলিল এবং তার নির্মাণকালে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন মসজিদটি নির্মাণ করার জন্য। এ মসজিদ নির্মাণে তুর্কি, আরব, পারস্য এবং ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ কাজ করেন। এ নির্মাণের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন শাহজাহান এর উজির (বা প্রধানমন্ত্রী) সাদুল্লাহ খান এবং শাহজাহানের পরিবারের ফজিল খান।
আরও পড়ুন: চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যের মসজিদটির ঝাড়বাতি সোনায় মোড়ানো!
জেনে অবাক হবেন, দিল্লির জামে মসজিদ উদ্বোধন করতে উজবেকিস্তান থেকে একজন ইমাম এসেছিলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, কয়েক শতাব্দী আগে নিজের দেশ থেকে ভারতে আসতে তাকে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে।

মসজিদটির চত্বরে প্রায় ২৫ হাজার মুসলিম নামাজ আদায় করতে পারে। আর মসজিদের ভেতরে বসতে পারেন ৮৫ হাজার মুসলমান। সেখানে এত বিপুলসংখ্যক মানুষের ইবাদতের দৃশ্য খুবই দর্শনীয়। বিশেষ করে ঈদে দিল্লি জামে মসজিদে নামাজ দেখা ও পড়া চিরকাল মনে রাখার মতো ব্যাপার।
আরও পড়ুন: বিশ্বের মুসলমানদের জন্য এ মসজিদটি গর্বের প্রতীক
দুঃখজনক হলো, এই মুগ্ধকর মসজিদে দু’বার হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ সালে সেখানে বোমা বিস্ফোরণ হয়। এরপর ২০১০ সালে দিল্লির জামে মসজিদে গোলাগুলি হয়েছে। ভয়াবহ এ দুটি ঘটনার পরেও পর্যটকদের কাছে দিল্লির প্রধান আকর্ষণ হিসেবে টিকে আছে এটি।