রিয়ালের প্রত্যাবর্তনের স্বপ্নভঙ্গ, ১৬ বছর পর সেমিফাইনালে আর্সেনাল

১ সপ্তাহে আগে
ম্যাচ শুরুর বেশ আগ থেকেই সান্তিয়াগো বের্নাব্যুতে যুদ্ধের সাজ সাজ রব। 'রেমনটাডা'র (প্রত্যাবর্তন) প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামা রিয়াল মাদ্রিদের খেলায় অবশ্য সেই আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৩ গোলের ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে যেভাবে মরিয়া হয়ে খেলতে হয়, সেই মরিয়া ভাবের দেখা মেলেনি কিলিয়ান এমবাপ্পে-ভিনিসিউস জুনিয়রের খেলায়। বের্নাব্যুতে ৯০ মিনিট দীর্ঘ সময় হলেও মিরাকল ঘটাতে পারেনি লস ব্লাঙ্কোরা। বরং আর্সেনালের মাঠের পর নিজেদের মাঠেও হার স্বাদ পেয়ে চ্যাম্পিয়ন লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সান্তিয়াগো বের্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল। প্রথম লেগেও ৩-০ গোলে জয় পাওয়ায় গানাররা দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে রিয়ালকে পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে।


এদিন ম্যাচের তিনটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। বুকায়ো সাকার গোলে আর্সেনাল এগিয়ে যাওয়ার অল্পক্ষণ পরেই সমতা ফেরান ভিনিসিউস জুনিয়র। কিন্তু ম্যাচের যোগ করা সময়ে আর্সেনালকে জয়সূচক গোল এনে দেন গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লি।


দীর্ঘ ১৬ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল আর্সেনাল। এর আগে সবশেষ ২০০৮-০৯ মৌসুমে সেমিফাইনালে খেলেছিল গানাররা।


আরও পড়ুন: ডি ব্রুইনার জন্য আগ্রহী মেসির লিগের দল!


সান্তিয়াগো বের্নাব্যুতে এদিন রিয়ালের শুরুটা আশা জাগানিয়াই ছিল।  দ্বিতীয় মিনিটেই বল জালে পাঠিয়েছিলেন এমবাপ্পে। ভিনিসিউসের ক্রসে এই ফরসি বল জালে পাঠালেও পরিষ্কার অফসাইডে থাকায় গোল বতিল করেন রেফারি।


পরের চার মিনিটে আর্সেনাল ভালো দুটি আক্রমণ করে। প্রথমটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও দ্বিতীয়টি কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান রিয়ালের গোলরক্ষক কোর্তোয়া।


এমনই এক কর্নার গানারদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছিল। কর্নার থেকে আসা বল কোর্তোয়া গ্লাভসে জমালেও, পেনাল্টি বক্সের ভেতরে মিকেল মেরিনোকে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার রাউল অ্যাসেন্সিও। রেফারি শুরুতে এড়িয়ে গেলেও ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান।


তবে সেই পেনাল্টি কাজে লাগাতে পারেনি গানাররা। বুকায়ো সাকার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া।


২৩ মিনিটে ডেকলান রাইসের বাধায় আর্সেনালের ডি-বক্সে পড়ে গিয়েছিলেন এমবাপ্পে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে প্রতিবাদ জানান আর্সেনালের খেলোয়াড়রা। গানারদের বাধায় ভিএআরে পুনরায় তা যাচাই করে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নাকচ করে দেন রেফারি।


প্রথমার্ধে রিয়াল বেশ কিছু আক্রমণ শানালেও তাতে ধার ছিল না। গোলে ৬টি শট নিলেও একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।


রিয়াল মাদ্রিদ লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে ৫৬ মিনিটের সময়। পাল্টা আক্রমণে বেলিংহ্যামের পাস পেয়ে শট নিতে দেরি করেন ভিনিসিউস। পরবর্তীতে যে দুর্বল শট নেন তা ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি আর্সেনালের গোলরক্ষক ডেভিড রায়াকে। পরের মিনিটে রদ্রিগোর জোরাল হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান রায়া।


খেলায় প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ৬১ মিনিটে একসঙ্গে ৩টি পরিবর্তন আনেন আনচেলত্তি। রদ্রিগো, ডাভিড আলাবা ও লুকাস ভাসকেসকে তুলে দানি সেবাইয়োস, ফ্রান গার্সিয়া ও এন্দ্রিককে নামান তিনি। আর তার কিছুক্ষণ পরেই গোল হজম করে রিয়াল।


আরও পড়ুন: ব্রাজিল অথবা রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হয়ে ফিরবেন ক্লপ!


ছোট ছোট পাসে ওপরে ওঠা মেরিনো দারুণ থ্রু পাস বাড়ান বক্সে। চোখের পলকে ছুটে গিয়ে চিপ শটে কোর্তোয়ার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে পেনাল্টি মিসের প্রায়শ্চিত্ত করেন সাকা।


তবে গোল করার পরেই  কেমন গাছাড়া ভাব চলে আসে গানারদের মধ্যে। যার মাশুল দেয় তারা গোল হজম করে। গোলরক্ষকের পাস পেয়ে মুভ করতে দেরি করে ফেলেছিলেন উইলিয়াম সালিবা। ভিনিসিউস যে ডান দিক থেকে ছুটে আসছেন, সেটাও লক্ষ্য করেননি গানারদের এই ফরাসি ডিফেন্ডার। ভিনি সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বল কেড়ে নিয়ে জালে পাঠান।


গোল করে ঝিমিয়ে পড়া গ্যালারিতে প্রাণের সঞ্চার করেন এই ব্রাজিলিয়ান। সতীর্থদেরও তাঁতিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। উল্টো ম্যাচের যোগ করা সময়ে আরও এক গোল হজম করে ডিফেন্ডিং চ্যম্পিয়নরা।


যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মেরিনোর থ্রু বল ধরে জয়সূচক গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার মার্টিনেল্লি।


সেমিফাইনালে আর্সেনাল প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে পিএসজিকে। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন