সোমবার (১২ মে) বিকেলে হিলির গোরস্তান রোডের রিনা মোটরস নামক মোটর পার্টসের দোকানে ওই টাকার প্রকৃত মালিক শফিকুল ইসলামের কাছে টাকাগুলো তুলে দেন কিশোর তানভির ও রোহান। এর আগে টাকার প্রকৃত মালিককে না পেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন ওই কিশোর।
হিলির ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, গত রোববার (১১ মে) রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে শান্তিমোড় নামক এলাকায় ঢোকার আগমুহূর্তে কোমড়ে থাকা টাকার বান্ডিলটি পড়ে যায়। একটু পর বিষয়টি জানতে পেরে সেই পথে সারারাত ধরে টাকা খোঁজেন কিন্তু না পেয়ে হতাশা হয়ে বাসায় ফেরেন।
ব্যবসায়ী শফিকুল আরও জানান, পরদিন সোমবার সকাল বেলা বিষয়টি নিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর ফেসবুকে টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার একটি পোস্টটি দেখতে পান। সেই মোতাবেক হিলির গোরস্তান রোডের রিনা মোটরস নামক মোটর পার্টসের দোকানে গিয়ে টাকার মালিকানা প্রমাণ করে টাকা ফেরত পান।
আরও পড়ুন: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা!
শফিকুল বলেন, দুই কিশোর আমার হাতে টাকাগুলো তুলে দেয়। টাকা হারিয়ে যাওয়ার পর সেই টাকা আবারও ফিরে পাব, সেটি আশা করিনি। তবে আমার খুব কষ্টের টাকা ছিল।
কিশোর তানভীর ও রোহানের বাড়ি হিলির মাঠপাড়া গ্রামে। রোববার রাতে তারা রিকশায় করে হিলি বাজারে যাচ্ছিল কেনাকাটা করতে। পথে শান্তিমোড় নামক এলাকায় সড়কে পড়ে থাকা টাকার বান্ডেল কুড়িয়ে পায়। এরপর রিক্সাচালকসহ তারা দুজনে টাকার মালিককে খুঁজেও পায়নি।
এরপর টাকা পাওয়ার বিষয়টি তারা তাদের বড় ভাইকে জানালে তিনি তার মহাজন রিনা মোটরসের মালিককে জানান। এরপর টাকা পাওয়ার বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট দেয় দোকান মালিক। টাকার মালিককে খুঁজে পাওয়ার পর ফেরত দেন টাকাগুলো।
রিনা মোটরসের স্বত্বাধিকারী মামুনুর রশীদ বলেন, গতকাল রাতে আমার দোকানে ছোট ভাই তানভীর ও রোহান এসে বলে, আমরা কিছু টাকা কুড়িয়ে পেয়েছি। টাকার মালিককে খুঁজতে পৌরসভার মাইকের মাধ্যমে মালিককে খুঁজতে মাইকিং করার কথা বলে ওরা। আমি বলি মাইকিং করার দরকার নেই, ফেসবুকে পোস্ট দিলেই প্রকৃত মালিককে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: প্রেম করে বিয়ে, দেড় বছর পর স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ
তিনি আরও জানান, সেই মোতাবেক টাকা পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়া হয়। সেই পোস্ট দেখার পর হিলির ফকিরপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলাম এসে বলেন, টাকাটি তার। বর্ণনা অনুযায়ী টাকার পরিমাণ মিলে যাওয়ায় টাকাগুলো তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তিনি খুশি হয়ে ওই দুই ছেলেকে এক হাজার করে দুই হাজার ও রিকশাচালককে এক হাজার টাকা পুরস্কৃত করেছেন। সচরাচর এমন দৃশ্য দেখা যায় না।
এদের দেখে অন্য কিশোররা যেন কুড়িয়ে পাওয়া অন্যের অর্থ সম্পদের প্রতি লোভ লালসা না করে মালিকের নিকট ফেরত দেয় এমনটিই দাবি স্থানীয়দের।
]]>