মেহেরপুর মাথাভাঙ্গা নদীতে নির্মিত এ ব্রিজটি শেষ হতেই সামনে মাঠ। মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া সড়কের সঙ্গে সংযোগ হওয়ার কথা থাকলেও ব্রিজটি মিলেছে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে।
প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালে ব্রিজের নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে এটি। প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে জমি অধিগ্রহণ না করেই ব্রিজ নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। কুষ্টিয়া অংশে দৌলতপুর উপজেলার মধুগাড়ি সড়কের সঙ্গে সংযোগ হলেও মেহেরপুর গাংনী উপজেলা অংশে ব্যবহার করতে পারছে না সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১৫ গ্রামের মানুষ
মালামাল বহন কিংবা ফসল আনা নেয়ার জন্য ঘুরে যেতে হচ্ছে ৯ কিলোমিটার বেশি পথ। অগত্যা ঝুঁকি নিয়েই অনেকে পার হচ্ছে এপাশ অংশে। প্রতিনিয়ত এখানে আহত হচ্ছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। দ্রুত সমস্যার সমাধানের দাবি তাদের।
মুদি ব্যবসায়ী আবু রায়হান বলেন, ‘দৌলতপুরে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মেহেরপুরে মালামাল বহন করতে অসুবিধা হয়। এ ব্রিজটি ব্যবহার করতে পারলে পণ্য পরিবহনের খরচ কমে যেতো।’
গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের আজিজুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সময় অসুস্থ ব্যক্তি নিয়ে আসতে বেগ পেতে হয়। ব্রিজ তৈরি করে লাভ হলো কী?’

এছাড়াও নদীর সংলগ্ন জমির উৎপাদিত ফসল পরিবহন করতে না পেরে স্বল্পমূল্যে বিক্রির আক্ষেপের কথা জানালেন কয়েকজন কৃষক।
এদিকে রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত করতে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণে নেই মালিকপক্ষের অমত। কিন্তু মূল্যপরিষদে বারবার দিন পেছানোর অভিযোগ তাদের।
ব্রিজ সংলগ্ন জমির মালিক জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে ব্রিজের কারণে আমার দেড় বিঘা জমি নষ্ট হয়েছে। আরও এক বিঘা জমি অধিগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে সরকার। সঠিক মূল্য দিয়ে জমি দ্রুত নিয়ে নিলে আমাদেরও উপকার হয়।’
আরও পড়ুন: নির্মাণ খরচ বাড়ে, কিন্তু সেতুর কাজ শেষ হয় না!
অপর মালিক আমিরুর ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন নোটিশ আর আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ৩ বছরেও সমাধান হচ্ছে না। অথচ মানুষ ভাবছে আমাদের কারণে রাস্তা হচ্ছে না।’
প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কথা স্বীকার করলেন উপজেলা প্রকৌশলী। প্রথমে অধিগ্রহণ না করে ব্রিজ নির্মাণের ফলে এই জটিলতা হয়েছে। তবে মাঝে জমির মালিকরা অমত করার ফলে ব্রিজের সঙ্গে রাস্তা নির্মাণ বিলম্ব হয়েছে বলেও জানান গাংনী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ। জানালেন ১২০ মিটার সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। সংযোগ সড়কটি তৈরি করতে ৪৯ শতক জমি অধিগ্রহণ করবে সরকার।