১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর, সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ব্রেকিং এলো পদত্যাগ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের খবর। বরিস সবসময় বলতেন, তার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। কিন্তু সেদিন রাশিয়ার জনগণকে জানালেন তিনি তার সিদ্ধান্ত বদলেছেন।
ইয়েলৎসিনের পদত্যাগের পর রুশ সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী পুতিন অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। এর তিন মাস পর তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ইয়েলৎসিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদায় নিয়ে তার পরবর্তী নেতা পুতিনকে বলেছিলেন, ‘রাশিয়াকে ভালোভাবে দেখো’।
বর্তমানে পুতিন ক্ষমতার ২৫ বছরের দ্বারপ্রান্তে। এসময়ে এসে জনমনে প্রশ্ন উঠছে, এই ২৫ বছরে রাশিয়ার জন্য কী করলেন তিনি? এ নিয়ে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক সাংবাদিকের বিশ্লেষণে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালানোর হুমকি পুতিনের
পুতিনের ক্ষমতায় থাকা ২৫ বছরের মধ্যে রাশিয়ার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একদিকে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পর রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছেন এবং বিশ্ব দরবারে রাশিয়াকে মাথা তুলে দাঁড় করিয়েছেন। অন্যদিকে, তার নেতৃত্বে ইউক্রেন আক্রমণ একটি মারাত্মক ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনা শুধু ইউক্রেনের জন্য নয় বরং রাশিয়ার জন্যও ডেকে এনেছে ভয়াবহ পরিণতি। পাশাপাশি পশ্চিমাদের থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশটি।
পুতিন মনে করেন, তিনি রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে দেশ স্বাধীন রেখেছেন। তবে তার সিদ্ধান্তে রাশিয়া ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপ এবং সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা, মুদ্রাস্ফীতিসহ বিভিন্ন ক্ষতি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুতিনের ‘গোঁড়ামি’র কারণেই এসব সংকটের মধ্যে পড়েছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন: ভারতে আসছেন পুতিন, ‘বন্ধু’ মোদির সঙ্গে কী নিয়ে বৈঠক হবে?
রাশিয়ার জন্য ২৫ বছরে পুতিন কী করলেন?- এ প্রশ্নটি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে।
যদি জাতীয় ও বৈশ্বিক শক্তি দিয়ে বিচার করা হয়, তবে ধরা যায় তিনি সফল হয়েছেন। তবে জনগণের মঙ্গল এবং শান্তি রক্ষার দিক দিয়ে বিচার করা হলে, তার উত্তর অনেকটাই প্রত্যাশার বাইরে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের ভবিষ্যৎ রাশিয়ার ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা অনেকাংশেই যুদ্ধের পরিণতি এবং চলমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার ওপর নির্ভর করবে।
]]>