রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের সুস্বাস্থ্য নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

১ সপ্তাহে আগে
'অধিকার এখানেই, এখনই 'প্রকল্পের আওতায় নাগরিক উদ্যোগ ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও প্রত্যাশা বিষয়ক মতবিনিময়' শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী জয়িতা হোসেন।


এতে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেত্রী সামান্থা শারমিন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাকিয়া শিশির, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির লুনা নূর, গণ সংহতির গোলাম মোস্তফা, আমার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ার পারসন মজিবুর রহমান ভূঁইয়া (মঞ্জু), নাগরিক ঐক্যের (ছাত্র) মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তৌফিকুজ্জামান, ছাত্র অধিকার পরিষদের রোকেয়া জাভেদ মায়া।


বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেত্রীবৃন্দ তাদের বক্তব্য প্রদান করেন ।

 

বাপসার নির্বাহী পরিচালক ড. আলতাফ হোসেন বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আইন ও বিধি থাকলেও কার্যকর প্রয়োগের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। স্বাস্থ্যকে বিজ্ঞানসম্মত নীতিমালার আওতায় এনে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (SRHR)-কে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মাসিক স্বাস্থ্যবিধি (menstruation hygiene)-কে গুরুত্ব দিয়ে মূল পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হবে, কারণ সামাজিক ট্যাবুর কারণে অনেক মেয়ে স্কুলে যাওয়া বা পানি পান করা থেকেও বিরত থাকে। দেশের নাগরিক সংগঠন ও সরকারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে মানবাধিকার, মর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসের অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

 

সামান্থা শারমিন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (SRHR) নিশ্চিত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। সুস্থতা নিশ্চিতে দক্ষ চিকিৎসকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে সমাজকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে সমতার ভিত্তিতে সবাইকে এই আলোচনায় যুক্ত করতে হবে।


মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, নারীদের কাজের জন্য রাজনৈতিক দলে পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরি করতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (SRHR) নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। পরিবারে বাবা-মা ও সন্তানদের বন্ধুত্বসুলভ আলাপ-আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে।

 

আরও পড়ুন: কিডস ক্রিয়েশন টিভির ‘মেলে ধরি নিজেকে’ সমাপনী অনুষ্ঠিত


সভা থেকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে তরুণদের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও প্রত্যাশা অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রস্তাবিত দাবীসমূহ-

 

১. CEDAW Article 2 and 16.1 (c) reservation অপসারণের মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২. National Strategy for Adolescent Health ২০১৭-২০৩০, সংশোধনের মাধ্যমে বিবাহিত, অবিবাহিত, লিঙ্গ বৈচিত্র্যময়, প্রান্তিক, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সহ সকল মানুষকে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করা।
৩. জাতীয় বাজেটে তরুণদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি ও প্রতি জেলায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাতে প্রশিক্ষিত কৈশোর-বান্ধব সেবাকারী নিয়োগের মাধ্যমে গুনগতমান উন্নয়ন।
৪. লিঙ্গভিত্তিক ও পারিবারিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ এবং সাইবার অপরাধের সহ সকল রকম হয়রানি যা কিশোর-কিশোরী ও তরুণ সমাজের বিকাশে বাধা প্রদান করে সেসকল কর্মকাণ্ড বন্ধে আরো কার্যকারী ভূমিকা রাখতে হবে।
৫. আইনে হিজড়া লিঙ্গ সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট মর্যাদাপূর্ণ সংজ্ঞা প্রদান করা এবং অন্যান্য লিঙ্গ বৈচিত্র্যের পরিচয়ের সুনির্দিষ্ট পার্থক্য স্পষ্ট করার মাধ্যমে আইনিভাবে হিজড়াসহ সকল লিঙ্গ বৈচিত্র্যর ব্যক্তির মৌলিক অধিকার রক্ষা ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে ।
৬. মনো-সামাজিক স্বাস্থ্যকে মূলধারার স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে অন্তর্ভুক্তি করে এ বিষয়ে চলমান কুসংস্কারকে দূরীকরণে দৃঢ়ভাবে কাজ করা এবং এই সেবার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৭. মাধ্যমিক পর্যায়ে সার্বিক যৌনতা শিক্ষা (Comprehensive Sexuality Education) অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের কার্যকরী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নীতিমালায় যথাযথ ও প্রগতিশীল সংশোধন আনতে হবে।
৮. সর্বোপরি বৈষম্য বিলোপ আইন - ২০২২ সংশোধনের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব পাশ করতে হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন