রাঙ্গামাটিতে অনুমোদন ছাড়া করা যাবে না পর্যটন স্থাপনা

৩ সপ্তাহ আগে
সাজেকসহ রাঙ্গামাটি জেলায় অনুমোদন ছাড়া পর্যটন ও বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।


সোমবার (২৪ মার্চ) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিমের স্বাক্ষরিত এক আদেশে জানানো হয়, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (ইহার ওপর সব সংশোধনী) এর ২২ ধারার আলোকে প্রথম তফসিলের ক্রমিক ২৮ অনুযায়ী স্থানীয় পর্যটন পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি তফসিলভুক্ত কাজ। ইতোমধ্যে স্থানীয় পর্যটন সংক্রান্ত কার্যাদি পরিষদ আইন অনুসারে সরকার পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরও করেছে।


কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অপরিকল্পিভাবে বাণিজ্যিক ভবন/পর্যটন স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। এতে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ (ইহার ওপর আনা সব সংশোধনী) লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অগ্নিদুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় হতেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: সাজেকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বিজিবি


উপর্যুক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সাজেকসহ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সব জায়গায় জেলা পার্বত্য পরিষদের অনুমোদন ছাড়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট কোনো বাণিজ্যিক ভবন/স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশনা জারি করা হলো; একইসঙ্গে নির্দেশনা কার্যকরে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ, দফতর, সংস্থার প্রতি নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছে জেলা পরিষদ।

 

এ বিষয়ে পর্যটন উদ্যোক্তা ললিত চন্দ্র চাকমা বলেন, ‘জেলা পরিষদের এমন সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক স্থানীয় পর্যটন তাদের হাতে ন্যস্ত। বর্তমানে পর্যটনের নামে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে যেভাবে স্থাপনা গড়ে উঠছে। এতে পাহাড়ের প্রকৃতি ও পরিবেশ হুমকিতে পড়েছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, অন্যথায় পর্যটকরা রাঙ্গামাটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আমি চাই জেলা পরিষদ সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করুক।’


আরও পড়ুন: ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই সাজেকে যেতে পারবেন পর্যটকরা


তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে জেলা পরিষদকে সজাগ থাকতে হবে, যাতে কোনো ধরণের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, রাজনীতি করণের মত বিষয় এখানে যুক্ত হয়ে না যায়। কারণ আমাদের সবার একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত, তা হলো রাঙ্গামাটিতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সেটা হতে হবে প্রকৃতি ও পরিবেশকে অক্ষুণ্ন রেখে।


রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ আগুনে রিসোর্ট-কটেজ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, স্থানীয়দের বসতবাড়িসহ ৯৮টি স্থাপনা পুড়ে যায়। তারপর হতে বিভিন্ন মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রাঙ্গামাটিতে অপরিকল্পিত পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ ও জেলা পরিষদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা।


প্রসঙ্গত, পার্বত্য চুক্তির আলোকে সরকার ২০১৪ সালের  স্থানীয় পর্যটন খাত জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করলেও এই প্রথম পর্যটন সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা জারি করলো রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন