রংপুরে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন দেড় হাজার ধর্ষণ মামলা, নার্সের কান্না

৩ দিন আগে
দিনের পর দিন বিচার না হওয়ায় মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। বর্তমানে ৬ হাজার মামলার বিচারাধীন রয়েছে, তার মধ্যে শুধু ধর্ষণ মামলাই আছে অন্তত দেড় হাজার। ভুক্তভোগীরা বলছেন, আইনি জটিলতার কারণে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, সরকার এ সংক্রান্ত নতুন আইন পাশ করলে দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালে ধর্ষণের শিকার হন রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সেবিকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীর আক্ষেপ, গত ১৫ বছর ধরে আইনি জটিলতার কারণে মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। তার মতো অনেক নারী দীর্ঘ দিন রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ঘুরছেন ন্যায় বিচারের আশায়। তিনি বলেন, ২০১০ সালে মামলাটা হয়। মামলা হওয়ার পরে আজ ১৫ বছর ধরে কোর্টের মধ্যে যাওয়া-আসা করছি। কিন্তু আমি সঠিক বিচার পাচ্ছি না। দিনের পর দিন আমার আইনজীবীকে শুধু টাকা দিচ্ছি আর ঘুরে বেড়াচ্ছি। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার কোনো আভাস নেই। শুধু হয়রানি হচ্ছি পদে পদে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী বলেন, বাবা ২৪ বছর থেকে হয়রানি হচ্ছি। কোর্টের দরজায় আসতেছি আর যাচ্ছি কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। রায় হবে হবে কিন্তু আর রায় হয় না। এভাবেই দিন পার করছি। কোনো সুফল পাচ্ছি না।


আরেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, বাদী মারা গেছে ২০১৬ সালে। তার একটা সাক্ষীও আসে না। অথচ আজকে ২০২৫ সাল আমি এখনও মামলায় ঝুলে আছি। আমার অপরাধ হলে আমি শাস্তি ভোগ করব। সেটাও আমাকে দিচ্ছে না। এভাবেই ঝুলে ঝুলে দিন পার করছি।


তবে মামলা বিলম্বিত হলে সুযোগ পায় আসামিরা। এ কারণে এমন মামলা গুরুত্ব দিয়ে বিচারের তাগিদ আইনজীবীদের।


আরও পড়ুন: রাজশাহী বিভাগে ৪ লাখ মামলার জট, নিষ্পত্তি কবে?


রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মো. আব্দুর রশীদ চৌধুরী বলেন, অধিবেশনের মধ্যে মামলা না হয় যদি তাহলে মামলা একমাস পরে তারিখ পরতে পরতে দুই থেকে তিন বছর পার হয়ে যাবে। মামলা চলমান গতিতে চলতেই থাকবে কিন্তু বন্ধ হবে না। বন্ধ দিতে গেলে তাকে গ্রাউন্ড দিতে হবে। কেন আজকে মামলার রায় হলো না। পরবর্তী সেশন আরেকটি তারিখ দিবে। তারিখ পেছানো হবে কেন। মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।


এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত ও ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করা নিয়ে সরকারের নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মামলাজট কমবে।


রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন মোকদ্দমায় যে কোন মামলার নিষ্পত্তি সময়সীমা দেয়া আছে ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। কিন্তু এই আদেশটা বাধ্যতামূলকই না, এটা একটি হুকুমের আদেশ। এটা বাধ্যতামূলক ভাবে আইনটা করা। এটা হলে আসামীরা ন‍্যায় বিচার পাবে ও মোকদ্দমা গুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন