নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জেনে রাখো, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরা (মুদগা) আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীর তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীর তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখো, সে গোশতের টুকরাটি হলো কলব বা অন্তর।’ (বুখারি ৫০)
এখানে অন্তর পরিশুদ্ধ রাখার কিছু আমল কোরআন ও হাদিসের আলোকে তুলে ধরা হলো।
আল্লাহকে ভয় করা
আল্লাহকে ভয় করার মাধ্যমে একজন মুমিন পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে। আত্মশুদ্ধির জন্য আল্লাহর ভয় আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘এতে (কোরআন) যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের শরীর রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে।’ (সুরা যুমার ২৩)
আল্লাহর স্মরণ
আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার অন্যতম উপায় হলো আল্লাহকে স্মরণ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করুন এবং একনিষ্ঠভাবে তাতে মগ্ন হোন।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল ৮)।
কোরআন তেলাওয়াত
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।’ (সুরা রাদ ২৮)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে, আর একটি নেকির বদলা হবে দশগুণ, একথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।’ (তিরমিজি ২৯১০)
হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কোরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিরা সম্মানিত ফেরেশতাগণের সঙ্গে থাকবে। আর যারা আটকিয়ে কষ্ট করে কোরআন তেলাওয়াত করে তারা দ্বিগুণ সওয়াব পাবে।’ (মুসলিম ১৮৯৮)
বেশি বেশি জিকির করা
আল্লাহর জিকির মানবাত্মার রোগ-ব্যাধি দূর করে এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে। পবিত্র কোরআনে বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে (সর্বাবস্থায়) আল্লাহর জিকির করে।’ (সুরা আলে ইমরান ১৯১)
দোয়া করা
একজন মুমিন আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হয়। কারণ যে কোনো কাজের ইচ্ছা হলে তা প্রথমে আল্লাহ তাআলার কাছে চাইতে হয়। আল্লাহ তাআলার কাছে না চাইলে তিনি অখুশি হন।
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মাই ইউহিব্বুকা ওয়াল আমালাল্লাজি ইউবাল্লিগুনি হুব্বাক, আল্লাহুম্মাজআল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়্যা মিন নাফসি ওয়া আহলি ওয়া মিনাল মা-ইল বারিদ।
অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার ভালোবাসা চাই। যে আপনাকে ভালোবাসে তার ভালোবাসা চাই। এমন আমল করতে চাই যা আপনার ভালোবাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। হে আল্লাহ, আপনার ভালোবাসা আমার কাছে আমার নিজের চেয়ে, আমার পরিবারের চেয়ে এবং ঠান্ডা পানির চেয়ে বেশি প্রিয় বানিয়ে দিন। (তিরমিজি ৮৩৯০/৩৪৯০, রিয়াদুস সালিহিন ১৪৯০)
]]>