অভিযুক্ত তারা মিয়া উপজেলার মশাখালী টানপাড়া গ্রামের হক মিয়ার ছেলে। গত মঙ্গলবার বিকেলে গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ করা হয়।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন.এম. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তালিকা অনুযায়ী আমরা কার্ড বিতরণ করেছি। মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে এই তালিকা তৈরি করেছিল। আমরা সে অনুযায়ী কার্ড দিয়েছি। তবে আবেদনকারীর বাড়ি গফরগাঁও হলেও তিনি আবেদন করেছিলেন ঢাকায়। আমরা ঘটনাটি জানার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। যদি ওই ব্যক্তি জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়ার সঠিক প্রমাণাদি দিতে না পারেন, তাহলে দাফতরিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার গেজেট বাতিল করা হবে।
ইতোমধ্যে তারা মিয়ার কাছ থেকে স্বাস্থ্য কার্ড ফেরত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রতিনিধিকে সদস্যসচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এতে একজন পুলিশ পরিদর্শক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধি, উপজেলার আহত জুলাই যোদ্ধাদের একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তথ্য গোপন করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছরের কারাদণ্ড
উপজেলার মশাখালি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল হাসান চমক ফকির বলেন, জুলাই যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্য কার্ড পাওয়া তারা মিয়া যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলের ছবি সাটিয়ে মেম্বার পদপ্রার্থী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণাও চালিয়েছেন। তার ফেসবুক পোস্টে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অসংখ্য ছবি রয়েছে। মূলত গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর রাকিয়াপুড়া এলাকায় অসাবধানতাবশত ভাইয়ের লাঠির আঘাতে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এখন তাকে আহত জুলাই যোদ্ধা বলা হচ্ছে।
গফরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজের আস্থাভাজন পৌরসভার সাবেক মেয়র ইকবাল হোসেনের সঙ্গে তারা মিয়ার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবিতে তিনি নিজেকে ইউপি সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করেছিলেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য কার্ড পাচ্ছেন ৩৬ জেলার ৪,৫৫১ জুলাই যোদ্ধা
এসব ছবির বিষয়ে অভিযুক্ত তারা মিয়া বলেন, আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০০০ সালের দিকে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকও ছিলাম। যেসব ছবি ছড়িয়েছে, সেগুলো এডিট (সম্পাদনা) করা। গফরগাঁওয়ে আন্দোলনের সময় পরিবেশ ভালো না থাকায় গাজীপুরের মাওনাতে আন্দোলনে অংশ নিই। সেখানে আমার ডান চোখে পুলিশের লাঠির আঘাত লাগে। সেখানে আমি অজ্ঞান হলে সহযোদ্ধারা আমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে আমি চিকিৎসা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, উপজেলার মশাখালি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল হাসান চমক ফকির ফেসবুকে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার ভাই মিলন ফকির ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে মিলন ফকির আমার বাবাকে রাজাকার বলে অন্য একজনকে বাদী করে মামলা করিয়েছিলেন। এই মিলন ফকির ২০২৯ সালে আমার নামে চাঁদাবাজি মামলাও দায়ের করেন।
]]>