যশোরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার

৪ সপ্তাহ আগে
যশোরের শার্শায় জেলায় 'স্তন ক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার ও আলোচনা সভা' অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) শার্শা উপজেলা কলেজ, শার্শা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও 'আমরা নারী'র যৌথ উদ্যোগে শার্শা উপজেলা অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ক্যান্সার সার্জন ও বিশেষজ্ঞ ডা. বনি আমিন। তিনি বলেন, 'স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি হলো সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নিজের প্রতি যত্নশীল থাকা। প্রতিটি নারী যদি নিজের শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে সচেতন হন, তাহলে উপকৃত হবেন শুধু তিনি নন, তার পরিবার, সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মও।'


ডা. বনি আমিন আরও বলেন, 'সময়মতো রোগ সনাক্তকরণ, যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ এবং ইতিবাচক মনোভাব- এই তিনটি বিষয়ই জীবন রক্ষার সবচেয়ে কার্যকর ও শক্তিশালী হাতিয়ার।'


বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নিয়াজ মাখদুম। তিনি বলেন, 'স্তন ক্যান্সারের সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে আমাদের অবশ্যই শুরু করতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ক্যান্সারমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য শিক্ষাঙ্গণ থেকেই সামাজিক আন্দোলন শুরু হওয়া জরুরি।'


শার্শা উপজেলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাসানুজ্জামান বলেন, 'আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। ক্যান্সারমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য এখনই শিক্ষাঙ্গন থেকে সামাজিক আন্দোলনের সূচনা জরুরি।'


'আমরা নারী'-এর নির্বাহী সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা নারী শুধু একটি সংগঠন নয়, এটি একটি মানবিক অনুপ্রেরণা। আমরা প্রত্যেকে যদি সচেতনতার দূত হয়ে এগিয়ে আসি, তাহলে ক্যান্সারমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।'


'আমরা নারী'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এম. এম. জাহিদুর রহমান (বিপ্লব) বলেন, 'আমরা নারী একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সামাজিক সংগঠন, যা দীর্ঘদিন ধরে নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্তন ক্যান্সার সচেতনতার দূত বা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে তারা সমাজে সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দিতে পারে।'


আরও পড়ুন: দেশে ১০ শতাংশ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন


বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সময়মতো সনাক্ত না হওয়ার কারণে প্রাণ হারান। দেশের মোট ক্যান্সার রোগীর প্রায় এক-ষষ্ঠাংশই স্তন ক্যান্সারে ভোগেন। তবে নিয়মিত আত্মপরীক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এই মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।


ডা. বনি আমিন তার আলোচনায় বলেন, 'স্তন ক্যান্সার নারীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার অন্যতম বড় হুমকি। এটি তখন সৃষ্টি হয়, যখন স্তনের কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং টিউমারে পরিণত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতনতা বজায় রাখলে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব।'


অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের শেষে উপস্থিত সবাই ক্যান্সার সচেতনতার প্রাথমিক দিকগুলি সমর্থন করেন এবং সামাজিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন