এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে অভিযুক্ত পিয়ন মাহবুব আলম সুমনের বিরুদ্ধে বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতারণার শিকার অর্ধ শতাধিক নারী-পুরুষ। তারা সেখানে নানা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভও করেন।
এর আগে গেলো সপ্তাহে সুমনের বিরুদ্ধে উপজেলা মৎস্য অফিসেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীদের বেশ কয়েকজন।
আরও পড়ুন: জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাৎ, নাগরিক কমিটির নেত্রী গ্রেফতার
লিখিত অভিযোগ ভুক্তভোগীরা জানান, সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য অফিসের পিয়ন (অফিস সহায়ক) মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রত্যেক দরিদ্র অসহায়দের নগদ দুই লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেবেন। সেই অনুদানের টাকা পেতে হলে প্রত্যেককে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান ব্যাংকে ছয় হাজার টাকা জমা দিতে হবে।
পিয়ন মাহমুব আলম সুমনের এই আশ্বাসে ওই ইউনিয়নের অন্তত শতাধিক মানুষ টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। তার কথা অনুযায়ী টাকা দেয়ার পর প্রমানস্বরূপ ভুক্তভোগীদের মুঠোফোনে এসএমএস পাঠানো হয়। তাতে লেখা ছিল ‘আপনার একাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা জমা হয়েছে’। এক পর্যায়ে পিয়ন মাহবুব আলম সুমনের কৃতকর্মের বিষয়ে অনেকের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কর্মসংস্থান ব্যাংকে কারো নামে কোনো একাউন্ট নেই।
ভুক্তভোগীদের আরও অভিযোগ, সরকার প্রধানের অনুদানের নগদ টাকা ছাড়াও সরকারি ঘর পাইয়ে দেবার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা ও দুধ দেওয়া গাভী দেয়ার আশ্বাস দিয়ে জনপ্রতি পঞ্চাশ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এছাড়াও মাতৃকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও খাদ্য ভাতাসহ নানা ধরনের সরকারি ভাতার অর্থ পাইয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে মাহবুব আলম সুমন সহজ সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার সময় সংবাদকে বলেন, ‘এটা আমাদের অফিসিয়াল কোনো বিষয় না। আমাদের অফিসের পিয়ন পার্সোনালি যেটা করেছে এর দায়ভার মৎস্য অফিস নেবে না।’
আরও পড়ুন: বিসিবির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পাপনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অফিস সহায়ক সুমন নানা ধরনের অসুস্থতার কথা বলে গত রমজান মাসের শুরু থেকে অফিসে আসছে না। ঈদের পর ছুটি শেষে অফিস খুললেও সে আর আসেনি। মোবাইল ফোনেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে সনমান্দি ইউনিয়নের অন্তত পাঁচ ছয়জন এসে সুমনের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও জেলা অফিসে অবগত করেছি। অভিযোগকারীদের আবেদনগুলো জেলা অফিসে পাঠয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য স্যার তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করাবেন। অলরেডি সুমনকে শোকজও করা হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান বলেন, ‘আমার কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’