ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলাররা!

২ সপ্তাহ আগে
বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রীড়া টুর্নামেন্ট- ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য ফাঁস করলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্ত বিভাগের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ফ্রেড্রিক গার্ডেয়ার। তার দাবি, এ লিগের একাধিক ফুটবলার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য মেইল’ তাদের এক প্রতিবেদনে ইউরোপের ফুটবলে ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে ফ্রেড্রিক গার্ডেয়ারের দাবি তুলে ধরেছে। ক্রীড়া বিভাগের এ কালো জগৎ নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন সুইডিশ পুলিশের নেতৃত্বে থাকা গার্ডেয়ার। এর মধ্যে তার ১৮ মাস ধরে করা তদন্তে সাবেক ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার ডিকসন এতুহুর সুইডেনে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এতুহু দোষী প্রমাণিত হলে তাকে সুইডেনের ফুটবলে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

 

এবার তো গার্ডেয়ার আরও বড় তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। অভিযোগ তু্লেছেন প্রিমিয়ার লিগেও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের। ঘটনা ২০২১ সালের শেষের দিকের। গার্ডেয়ার ও তার বাহিনী সুইডেনের একটি অবৈধ ক্যাসিনোতে অভিযান চালান। সেখানে অনেকগুলো ফোন বাজেয়াপ্ত করেন। তার মধ্যে একটি ফোনে টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন লিগ, এমনকি ন্যাশন্স লিগের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফিক্সিংয়েরও প্রমাণ পান।

 

গার্ডেয়ার দাবি করেন, ফোনে প্রিমিয়ার লিগের একাধিক ফুটবলারের সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছেন তারা। তবে স্টকহ্যাম পুলিশ ও সুইডিশ পুলিশের সম্মিলিত সে তদন্ত বেশিদূর এগোয়নি। অনিচ্ছাসত্ত্বেও ওই বছরের ডিসেম্বরে তাকে কাজটির সমাপ্তি টানতে হয়।

 

এ বিষয়ে গার্ডেয়ার দ্য মেইলকে বলেন, “এই তদন্ত আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি আমার পুরো বাহিনীকে এই কাজে নিয়োজিত করেছিলাম। কিন্তু একই সময়ে, পুলিশ বলেছিল, ‘আমাদের কাজ এখানে শেষ’। এটা সেই বছরের ডিসেম্বর ছিল।”

 

আরও পড়ুন: আবারও ফিফার নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় ফুটবল

 

তবে তদন্ত কাজের সমাপ্তি টানতে হলেও সুইডেন ফুটবল ফেডারেশনকে তথ্যগুলো পৌঁছে দিয়েছিলেন গার্ডেয়ার। তার আশা ছিল, তারা ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

 

গার্ডেয়ার বলেন, “আমরা সুইডেনের ফুটবল ফেডারেশনকেও সরাসরি তথ্য দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘এটি গুরুতর’। আশা রাখি, তারা ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়েছে, তবে আমি ঠিক জানি না। এটি সুইডিশ ফুটবল এবং একাধিক দেশের ফুটবলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলমান ম্যাচ ফিক্সিং বন্ধ করতে ইংল্যান্ড এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্যেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”

 

প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলারদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একাধিক প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় ছিল (ফোনে পাওয়া গেছে)। ম্যাচের মধ্যে হলুদ কার্ড, কর্নার এবং অন্যান্য দিকগুলো নিয়ে বাজি ধরা হয়েছিল। সেই ফোনটি হয় স্টকহোম পুলিশের কাছে বা জাতীয় পুলিশ বাহিনীর কাছে রয়েছে।’

 

পুলিশ ও সুইডিশ এফএ-কে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে গার্ডেয়ার বলেন, ‘আমি শত শত ম্যাচ ফিক্সিং মামলায় কাজ করেছি এবং এটি ছিল সবচেয়ে স্পষ্ট মামলা। জব্দ করা মোবাইল ফোনে পাওয়া তথ্য থেকে স্পষ্ট আর কিছু হতে পারে না। পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এটি খুবই ভালো সুযোগ।’

 

আরও পড়ুন: বর্ণবাদের শিকার এমবাপ্পে-ভিনিসিউস, তদন্ত শুরু লা লিগার

 

সুইডিশ এফএ-এর ইন্টেগ্রিটি অফিসার জোহান ক্লেসন ডেইলি মেইল স্পোর্টকে গার্ডেয়ারের তদন্তের বিষয়ে বলেন, ‘এটি ঠিক যে ২০২১ সালে সুইডিশ এফএ পুলিশের কাছ থেকে সাধারণ কিছু তথ্য পেয়েছিল যে, একটি অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযানের পর একটি ফোনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ ফিক্সিং সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু আমরা যে তথ্য পেয়েছি তাতে কোনো নির্দিষ্ট বিবরণ ছিল না (চলমান পুলিশ তদন্তের গোপনীয়তার কারণে), যার উপর আমরা পদক্ষেপ নিতে পারতাম।’

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন