মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে প্রকাশ্যে চলছে মাদকের বেচাকেনা, কী বলছেন স্থানীয়রা

৩ সপ্তাহ আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প যেন মাদক ও অস্ত্রের স্বর্গরাজ্য। জানা গেছে, অন্তত ১০টি স্পটে প্রকাশ্যে চলছে মাদকের বেচাকেনা। বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, বড় রাজা, পিচ্চি রাজা টুনটুন ও মনুসহ শীর্ষ ২৫ মাদক কারবারি এসব স্পট নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যাম্পের মাদক কারবারি বন্ধে নিয়মিত অভিযানের দাবি বাসিন্দাদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় দিনেদুপুরে প্রকাশ্যেই চলছে মাদক বিক্রি। এমন ১০টি স্পটের সন্ধান মেলে। যেখানে প্রকাশ্যে চলে মাদক কেনা-বেচা। হাতে গাঁজার প্যাকেট রাখলেও কেউ চাইলেই ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিলও সরবরাহ করা হয়।

 

স্থানীয়রা জানান, এক নম্বর সেক্টরের বেলালের গলিতে ইয়াবা-হেরোইনের স্পট। নিয়ন্ত্রণ করে চুয়া সেলিমের অনুসারীরা। সেক্টর দুইয়ের শাকিল বুকসের সামনের হেরোইন-গাঁজার স্পট। নিয়ন্ত্রণ করে পিচ্চি রাজা। সেক্টর সাতের আলফালা মেডিকেলের গেটের স্পট নিয়ন্ত্রণ করেন বুনিয়া সোহেল, টুনটুন ও মুক্তার লালা। তিন নম্বর সেক্টরের এনএলজে হাইস্কুল গেট স্পটে হেরাইন বিক্রি করেন শরিয়তপুরী বাবু। পাঁচ নম্বর সেক্টরের জয়নাল হোটেলের সামনের স্পটে ইয়াবা-হেরোইন বিক্রি করেন গালকাটা মনু।

 

স্থানীয়রা বলছেন, গত ১৫ বছরে সাবেক বস্ত্র ও পাট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন ক্যাম্পের ২৫ শীর্ষ মাদক কারবারির মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্রের রমরমা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। থানা পুলিশও তাদের ভয়ে ক্যাম্পের ভেতরে অভিযান যেতো না। উল্টো মাসিক চাঁদা নিয়ে মাদকের কারবারে সহায়তা করেছে।

 

আরও পড়ুন: এক ডজন মামলার আসামি জেনেভা ক্যাম্পের সেই চুয়া সেলিম গ্রেফতার

 

ক্যাম্পবাসীদের সংগঠন এসপিজিআরসির নেতারা বলছেন, টাকার প্রলোভনে নানক ও রাষ্টন মাদক কারবারে তাদের জড়িয়েছে।

 

এসপিজিআরসির সভাপতি এম শওকত আলী বলেন, 

এটা মাদকের আখড়া হয়ে গেছে। এই আখড়া কে সৃষ্টি করলো? সেলসম্যান হিসেবে ব্যবহার করে আমাদেরক ক্যাম্পকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, রাজনৈতিক চাপেই এতদিন ক্যাম্পের ভেতরে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। তবে এখন ধারাবাহিক অভিযান চলছে। ক্যাম্পকে মাদকমুক্ত করতে বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

র‌্যাব ২- অধিনায়ক খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, 

গত ১৫ বছরে জেনেভে ক্যাম্পকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এই ব্যবহারের কারণে তারা বেপরোয়া হয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। আর এর প্রভাব শুধু মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মোহাম্মদপুরকেন্দ্রিক এলাকাগুলোতেও আতঙ্ক তৈরি হয়।

 

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার ৪০

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্যাম্পের মাদক সিন্ডিকেট ভাঙতে রাজনৈতিক প্রভামুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। পাশপাশি ক্যাম্পে মাদক ঢোকা বন্ধে আশপাশে নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারির পরামর্শ তার।

 

সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে মাদকের প্রবেশ বন্ধ বা প্রতিরোধ করা গেলে অপরাধ অনেক কমে আসতো।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন