জাপান ও সিঙ্গাপুরের রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিতেও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে মোংলা সমুদ্র বন্দরটি। বাংলাদেশে মোট আমদানির ৬০ ভাগ রিকন্ডিশন গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন বড় বড় মেগা প্রকল্পের মেশিনারিজ পণ্য এ বন্দরে আমদানি হওয়ায় কর্মসংস্থানও বেড়েছে এখানকার সাধারণ মানুষের।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও মোংলা বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানিতে কোন বিরূপ প্রভাব পড়েনি এ বন্দরে। বরং বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সম্প্রতি চীন সরকারের সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষের ৪ হাজার ৬৮ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দর উন্নয়ন / ৪০৬৮ কোটির প্রকল্পে চীনের সহায়তা, ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়বে কি?
এ উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে যে সকল কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো সঠিক সময় সুন্দর ভাবে বাস্তবায়ন হলে বন্দরের পরিধি আরও বেড়ে যাবে। বিশ্বের বাণিজ্যিক বাজারে মোংলা বন্দর একটি সুন্দর, পরিবেশ বান্ধব ও আধুনিক বন্দরে রূপান্তরিত হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৩ মে পর্যন্ত বন্দরে মোট ৭২৫টি দেশ-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়েছে। গাড়ির জাহাজ এসেছে ২২টি, এ জাহাজে মোট ১০ হাজার ৩৭৪টি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। ৯৩ লাখ ২৭ হাজার ২১৪ মেট্রিকটন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে অবস্থান করছে ইন্দোনেশিয়ান পতাকাবাহী ১১৫.৪৯ মিটার লম্বা, ৭.২৫ মিটার ড্রাফটের ‘এমভি সেলাটন ডামাই’ নামের কনটেইনারবাহী জাহাজ। জাহাজটিতে আমদানি করা বিদেশি বিভিন্ন পণ্যের ৩২৪ টিইইউজ কনটেইনার রয়েছে। কনটেইনারবাহী জাহাজটি থেকে কনটেইনার খালাসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের সহায়তায় মোংলায় বড় প্রকল্প, খুলছে সম্ভাবনার দ্বার
এছাড়াও আরও একটি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে বন্দরের ৬ নম্বর জেটিতে অবস্থান করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমভি ফেসকো ওলগা’ নামের রাশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজটি ১৩৮. ১ মিটার লম্বা, ৭.৪ মিটার ড্রাফটের। এ জাহাজটিতে দুই হাজার ১৯৫ মে. টন মেশিনারিজ যন্ত্রাংশের মালামাল রয়েছে। জাহাজ থেকে মালামাল বন্দর জেটিতে খালাসের কার্যক্রম চলছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে জাহাজ আসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বন্দরের চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখা। সম্প্রতি বন্দর চ্যানেলের আউটবারের খনন সম্পন্ন হওয়ায় সরাসরি বড় বড় জাহাজ বন্দর জেটিতে ভিড়তে পারছে। আর চ্যানেল ইনারবার ড্রেজিং চলমান, এ ড্রেজিং সম্পন্ন হলে বিদেশ থেকে আর বহির্নোঙরে বা হারবাড়িয়া এলাকায় পণ্য খালাস করতে হবে না। জাহাজগুলো বিদেশ থেকে সরাসরি বন্দর জেটিতে এসে নোঙর করতে পারবে।
]]>