মেহমানদারির গুরুত্ব ও ফজিলত

২ সপ্তাহ আগে
মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য ও মানবিক দিকগুলোর একটি। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে মেহমানদারি করাতেন সাহাবিদেরকেও উৎসাহিত করতেন। ইসলাম আগমনের আগেই রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় যেসব গুণের কারণে সবার প্রিয় ছিলেন তার একটি মেহমানদারি।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেরা গুহায় প্রথমবার জিবরাঈল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে গেলে তিনি তাঁকে যেসব বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন এর মধ্যে মেহমানদারির কথাও আছে।

 

ভীতসন্ত্রস্ত মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খাদিজা (রা.) বলেন, 

 

আপনি শান্ত হোন। আল্লাহ আপনাকে কখনো লাঞ্চিত অপদস্থ করতে পারেন না। কারণ, আপনি সবসময় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আচরণ করেন। (তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন না বা অনাত্মীয়সুলভ আচরণ করেন না। আপনি সবসময় সত্য বলেন। আপনি অপরের বোঝা বহন করেন। (কর্জ প্রভৃতি শোধ করেন।) নিঃস্বদের দেখাশোনা করেন। অতিথিদের সেবা যত্ন করেন। বিপদগ্রস্তদের সাহয্য করেন এবং সত্যের সহায়তা করেন।

 

মেহমানদারির বিষয়টিতে ইসলামে সবসময় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলামের বিধি অনুযায়ী মেহমানদারি নবীজির সুন্নত। আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.) সর্বপ্রথম পৃথিবীতে মেহমানদারির প্রথা চালু করেন।

 

আরও পড়ুন: সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের অর্থ ও ফজিলত

 

আতিয়্যা আওফি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তায়ালা হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে এ কারণে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন, তিনি মানুষকে খানা খাওয়াতেন, বেশি বেশি সালাম দিতেন আর মানুষ রাতে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি নামাজ আদায় করতেন। (তাম্বিহুল গাফিলিন)

 

মেহমানদারির ফজিলত সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 

 

যে ঘরে মেহমানদারী করা হয়, উটের কুঁজের মাংস কাটার উদ্দেশে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয়, সে গৃহে বরকত তার চেয়েও দ্রুত প্রবেশ করে। (ইবনু মাজাহ)

 

মেহমানদারির প্রতি উৎসাহিত করে বিশ্বনবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (বুখারি)

 

অন্য বর্ণনায় রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে মেহমানদারি করে না তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ)

 

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ও আখেরাতের দিনের ওপর ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অন্যথা নীরব থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ও আখেরাতের দিনের ওপর ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সমাদর করে।

 

আরও পড়ুন: যে কাজে বিয়ে বরকতময় হয়

 

তার বিশেষ মেহমানদারি হচ্ছে এক দিন এক রাত, আর স্বাভাবিক মেহমানদারি হচ্ছে তিন দিন। তার অতিরিক্ত যা করা হবে তা বদান্যতারূপে গণ্য হবে। আর মেহমানের পক্ষে মেজবানের বাড়িতে এতো অধিক দিন অবস্থান করা উচিৎ নয় যাতে সে অসুবিধা বোধ করে। (আহমাদ, তাহাবী)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন