মায়ের কোল থেকে ছিটকে ট্রেনের নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু

৩ সপ্তাহ আগে
বাগেরহাটের মোংলায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে মরিয়ম (৩) নামে এক শিশুর নিহত হয়েছে।

ট্রেন আসতে দেখে বাস থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা-মোংলা রেলপথের দ্বিগরাজ পয়েন্টে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দায়িত্বরত লাইনম্যান রেলগেইট না ফেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের।


নিহত শিশু মরিয়ম মোংলা সুন্দরবন ইউনিয়নের বুরবুড়িয়া এলাকার রোকন শেখের মেয়ে।


রেল কর্তৃপক্ষ জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গেটম্যান শাহিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে গেটম্যান পলাতক রয়েছেন।


পুলিশ ও প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, দুই সন্তানকে নিয়ে মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বুরবুড়িয়া এলাকা থেকে যাত্রীবাহী বাসে বাগেরহাটের খানপুর বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন ফাতেমা বেগম। পথে দ্বিগরাজ রেলক্রসিংয়ে মাঝ বরাবর বাসটি পৌঁছালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মোংলা কমিউটার নামে ট্রেনটি দ্রুতগতিতে রেলক্রসিং পাড় হচ্ছিল।


আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে কাটা পড়ে একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী নিহত


এ সময় সামনে দিয়ে যেতে না পেরে চালকের কথা অনুযায়ী যাত্রীবাহী বাস থেকে দুহাতে দুই সন্তানকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে তার কোল থেকে শিশু মরিয়ম ছিটকে ট্রেনের নিচে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুটির নিহত হয় আর অন্য সন্তানকে স্থানীয়রা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ট্রেনটি চলে গেলে শিশুটিকে উদ্ধার করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই শিশু মরিয়ম মারা গেছে বলে জানিয়েছেন ডা. শামিম।


এ দিকে, দায়িত্বে অবহেলার কারণে গেটম্যান মো. শাহিনকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন জনতা। এ সময় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেয়। এতে মোংলা-খুলনা মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। পরে পুলিশ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে এই সড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়। এ ঘটনার পর গেটম্যান পলাতক রয়েছেন। তার বাড়ি নাটোর জেলায় বলে জানা গেছে।


আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু


মোংলার টিকিট মাস্টার মো. শরিফুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে গেটম্যান পলাতক রয়েছে। তবে আমরা খবর পাওয়া মাত্রই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। রেল কর্তপক্ষ গেটম্যান শাহিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এ ছাড়া নিহত শিশ মরিয়মের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।


মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘গত বছরে মোংলা-খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মোংলা শহরের মধ্যে একটি মাত্র গেট। দায়িত্ব অবহেলার কারণে গেটম্যান মো. শাহিনের বিরুদ্ধে রেল পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং এ ঘটনায় মামলার গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।


গত বছর ২০২৪ সালে ১ জুন মোংলা-খুলনা ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গেটম্যানের অবহেলার কারণেই এই প্রথম এক শিশুর প্রাণ ঝরল মোংলা-খুলনা এই রেললাইনে। 
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন