রোববার (২ নভেম্বর) রাতে খুলনা নগরীর ফুলবাড়ীগেট এলাকার কুয়েট গেটের সামনে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখের ওপর গুলি ও ককটেল হামলা হয়। ঘটনাক্রমে ওই কার্যালয়ে থাকা মাদ্রাসাশিক্ষক ইমদাদুল হকের বুকে গুলি লাগলে তিনি নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ হয়ে আছে। একেবারেই সাধারণ একজন মাদ্রাসাশিক্ষকের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। অনেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যোগীপোল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখ রোববার রাতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসেছিলেন কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে। এ সময় পাশের মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইমদাদুল হক সেখানে যান আসন্ন মাহফিলের আমন্ত্রণ জানাতে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোলাগুলিতে আহত যুবক মারা গেছেন
ঠিক তখনই কয়েকজন অজ্ঞাত যুবক মোটরসাইকেলে এসে মামুনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালায়। গুলিতে মামুনসহ তিনজন আহত হন। তবে গুলি লাগে শিক্ষক ইমদাদুলের শরীরেও। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা ইমদাদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ইমদাদুল ছিলেন খুব ভালো মানুষ। কারও সঙ্গে কোনোদিন মনোমালিন্য হয়নি, সবাইকে সালাম দিতেন, হাসিমুখে কথা বলতেন। এমন একজন মানুষকে গুলি করে মারা— এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
আরেক প্রতিবেশী লতিফা বেগম বলেন, ‘তিনি রাজনীতি করতেন না, কেবল মাদ্রাসার কাজ আর ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়েই থাকতেন। এমন একজন সজ্জন মানুষের মৃত্যুতে আমরা সবাই স্তব্ধ। নিহত ইমদাদুল হকের দুই সন্তান—একজন চিকিৎসক, অন্যজন শিক্ষার্থী। স্ত্রীও স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে যুবদলের দুপক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে ছাত্রদল কর্মী নিহত
এ দিকে বিএনপি নেতা মামুনের ওপর হামলা ও শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে সোমবার সকালে ফুলবাড়ীগেট এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খুলনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে, অভিযোগ করেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা। অবিলম্বে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান তিনি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মামুনের ওপর হামলা হয়। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’

৩ সপ্তাহ আগে
৩







Bengali (BD) ·
English (US) ·