মার্কিন শুল্ক জটিলতায় চীনের গার্মেন্টস অর্ডার বাংলাদেশে আসার সুযোগ

২ সপ্তাহ আগে
মার্কিন শুল্ক জটিলতার কারণে চীনের ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি গার্মেন্টস অর্ডার বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা তৈরি হলেও নানামুখী জটিলতায় তা হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি থাকাসহ কাঁচামাল আমদানি এবং তৈরি পোশাক রফতানিতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। এ বিষয়ে নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে চীনের সরাসরি অংশগ্রহণ খুব নগণ্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ চীনে ২২৫ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে যা আগের বছরের ২১৭ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।

 

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান বলেন, ‘কিছু বড় আমদানিকারক আছেন যারা রিটেইলার থেকে ব্যবসা নিয়ে আবার ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা এখন বাংলাদেশে আসছে। তারা ফ্রি অব কস্ট ভিত্তিতে কাপড় ও উপকরণ দেবে, শুধু সেলাইয়ের কাজ করতে হবে। এটি মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাভজনক।’

 

আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা ১০০ পরিবেশবান্ধব কারখানার ৬৮টিই বাংলাদেশের: বিজিএমইএ

 

৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের বিপরীতে চীন থেকে আসা গার্মেন্টসের অর্ডারের পরিমাণ তুলনামূলক একেবারেই কম হলেও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে চীনের রয়েছে পরোক্ষ প্রভাব। বিশেষ করে এফওসির মাধ্যমে কাঁচামাল পাঠিয়ে বাংলাদেশ থেকে পোশাক তৈরি করে বিশ্বের অন্যান্য দেশে রফতানি করার সুযোগ চীন খুঁজছে।

 

বিজিএমইএর পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘চীন থেকে অনেক অর্ডার বাংলাদেশে আসছে এবং বাজারটি ধরার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। যেহেতু এফওসি অর্ডারের কাজ বাংলাদেশকে দিচ্ছে চীন; তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এগিয়ে আসতে হবে।’

 

বিজিএমইএর পরিচালক সাকিফ আহমেদ সালাম বলেন, ‘চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে নিজেদের উন্নত করতে হবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে, তাই অর্ডারগুলো লুফে নেয়ার জন্য এখনই ভালো সময়।’

 

তবে আমদানি ও রফতানি নীতির নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়ে উঠছে না বলে দাবি বিজিএমইএর। এক্ষেত্রে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিরও অভাব রয়েছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে স্যুট-জ্যাকেটের মতো উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরির অর্ডার পাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

 

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীন-ভারতের শুল্ক বিরোধ, তৈরি পোশাকের ক্রেতাদের নজর বাংলাদেশে!

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন,  ‘চীনের স্যুট-জ্যাকেটের মতো উচ্চমূল্যের পোশাকের অর্ডার পেতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়াতে হবে, যা ব্যয়সাপেক্ষ। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং সরকারকে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন সম্ভাবনা বাস্তবায়নে সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য।’

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শুল্কহার এখন ১২৫ থেকে ১৪৫ শতাংশে অবস্থান করছে এবং টানাপোড়েনের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এ অবস্থায় নিজেদের বিরাজমান সংকটগুলো কাটাতে পারলে আশার আলো দেখবে বাংলাদেশ। বিজিএমইএর পরিচালক এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রযুক্তির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অর্ডার আসলেও কাজ করা সম্ভব হয়নি। এখন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে আবারও সেই সুযোগ এসেছে, সেটি কাজে লাগাতে হবে। এটি করা গেলে ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে।’

 

উল্লেখ্য, বিশ্বের তৈরি পোশাক রফতানির শীর্ষে রয়েছে চীন। আর দ্বিতীয় স্থান দখলে প্রায়ই জোর লড়াই চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন