স্থানীয়দের ভাষ্য, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার ও বালু ব্যবসার বিরোধে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার ও তার বড় ভাই আতাউর সরদার। গত ৮ মার্চ সকালে মসজিদের ভেতর ঢুকে তাদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাইফুলের চাচাতো ভাই পলাশ ও প্রতিবেশী তাজেল হাওলাদার। হামলাকারীরা নিহতদের বাড়িঘর লুটপাটের পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এছাড়া, গত ২৭ ডিসেম্বর কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে ইউপি সদস্য আকতার শিকদার, তার ছেলে মারুফ এবং সমর্থক সিরাজ চৌকিদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, আধিপত্য বিস্তারের জেরে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও তার লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
জেলা পুলিশের তথ্য মতে, গত এক বছরে মাদারীপুরের পাঁচ উপজেলায় ৫২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, চারটি অজ্ঞাত লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও গ্রেফতার আতঙ্কে অনেক গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: মসজিদে ঢুকে ৩ জনকে হত্যা, আহত আরেকজনের মৃত্যু
স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের কারণে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাজারে বেচাকেনা কমে গেছে, সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশের আরও সক্রিয় হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুব হোসেন শাকিল বলেন, ‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল বাড়ানো ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা প্রয়োজন।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া সেল) শাহ্ মোহাম্মদ সজীব বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিরা যেন জামিন না পায়, সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।’
পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘অপরাধ কমাতে টহল ও অভিযান বাড়ানো হয়েছে। অধিকাংশ হত্যাকাণ্ড আধিপত্য বিস্তার ও বালু উত্তোলনসংক্রান্ত দ্বন্দ্ব থেকে ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
]]>