মাদক কারবারিকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

৩ সপ্তাহ আগে
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মাদকসহ কারবারিকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সোতাশী এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদর ইউনিয়নের সোতাশী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাবেক মেম্বার মতি কাজীর বাড়ি থেকে ইয়াবা উদ্ধার করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি দল। এ সময় মতি কাজীর ভাই ইসলাম কাজীকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।


ছাড়া পাওয়ার পর তাদের ধরিয়ে দিয়েছে এমন সন্দেহ করে রাতেই ওই গ্রামের ৫ ব্যক্তির বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে মতি কাজী ও তার ভাই ইসলাম কাজীসহ তাদের সহযোগীরা।


স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মতি কাজী ও তার ভাই ইসলাম কাজী মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। আটকের পরও তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।


আরও পড়ুন: টঙ্গীতে বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ


স্থানীয়রা জানান, মতি কাজীর বসতঘর থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তার ভাইকে আটকও করা হয়, কিন্তু কিছু সময় পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপরই মতি কাজী ও তার ভাই ইসলাম কাজীর নেতৃত্বে গ্রামের ৫-৬ জনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলায় আহতও হন বেশ কয়েকজন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


এ দিকে সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হাসান চৌধুরী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়ায় অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা।


সোমবার দিবাগত রাতে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিদর্শক রাজা মিয়া বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় মতি কাজীর নামে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন।


অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিদর্শক রাজা মিয়া বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোতাশী গ্রামে মাদক কারবারি সাবেক ইউপি সদস্য মতি কাজীর ঘর থেকে ৫০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।


আরও পড়ুন: গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ২০


মাদকসহ মতি কাজীর ভাই ইসলাম কাজীকে আটক করে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে (ইসলাম কাজীকে) আটক করা হলেও তার কাছ থেকে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তাই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী যে অভিযোগ করেছেন, তা সঠিক নয় বলে তিনি জানান।


বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘মাদক উদ্ধারের ঘটনায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থানায় মামলা করেছে। মামলায় আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’


বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় এলাকাবাসী মতি কাজী ও তার ভাইকে গ্রেফতারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। সেখানে পৌঁছে তাদের আশ্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’


আরও পড়ুন: গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ


ফরিদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শেখ মো. হাশেম আলী বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিদর্শক রাজা মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে মতি কাজীর বসতবাড়ি থেকে ইয়ারা উদ্ধার করা হয়। এ সময় মতি কাজীকে পাওয়া যায়নি, তার ভাই ইসলাম কাজীকে আটক করা হয়। 


স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ইসলাম কাজী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়, এ কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।


তিনি আরও বলেন, ‘তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন