২০১৪ সালে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে মাত্র ১২টি বীজ সংগ্রহ করে এক শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শিম চাষ শুরু করেন আহসান হাবিব। প্রথমবারেই হাতে পান প্রায় ৩ লাখ টাকার শিম বিক্রির অভাবনীয় সাফল্য। এরপর কিছুদিন বিদেশে পাড়ি জমালেও, ফের দেশে ফিরে পুরোদমে শিম চাষে মনোনিবেশ করেন। এখন তার আয় শুধু জমির ফসল নয়, শিম বীজ বিক্রিতেও আয় করছেন কয়েক লাখ টাকা।
এ বছর তিনি ৬০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন। এরইমধ্যে বিক্রি করেছেন এক লাখ টাকার বেশি শিম, প্রতি কেজি ১৩০ টাকা দরে। আরও সাড়ে চার লাখ টাকার শিম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘দেশে থেকেই লাভজনক চাষাবাদ করা সম্ভব, শুধু সঠিক ফসল ও সময় নির্বাচন করতে হয়।’
শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের মাঠজুড়ে এখন শুধুই শিমের ছড়াছড়ি। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ে বাঁশের মাচায় ঝুলে থাকা গাঢ় সবুজ লতাগুল্ম। মাচাভর্তি থোকা থোকা বর্ষার শিম, যা সাধারণত শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত। অথচ এই সিকৃবি-১ জাতের শিম বর্ষায় চাষ হয় এবং বাজারে চাহিদা ও দাম— দুটোই বেশি।
আরও পড়ুন: কফি চাষে মোখলেছুরের আয় লক্ষাধিক টাকা
চাষি আকবর আলী, শিপন মিয়া ও ইউনুস মিয়ারাও জানালেন, আহসান হাবিবের দেখাদেখি তারা এবার শিম চাষ শুরু করেছেন। তাদের ভাষ্য, কম খরচে বেশি লাভ— এটাই আমাদের আগ্রহের মূল কারণ।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান বলেন, ‘সিকৃবি-১ জাতের শিম বর্ষাকালীন চাষের উপযোগী। প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ মেট্রিক টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।’

কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর শুধু আশিদ্রোন ইউনিয়নেই ৫ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ মেট্রিক টন উৎপাদন। চাষে বিষমুক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। কীটনাশকের পরিবর্তে সেক্স ফেরোমন ও হলুদ ট্র্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

একক চেষ্টায় শুরু করা আহসান হাবিবের শিম চাষ এখন ছড়িয়ে পড়েছে ছাইটোলা ও খলিলপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে। তার দেখানো পথ অনুসরণ করে একের পর এক কৃষক এখন বেছে নিচ্ছেন সবচেয়ে লাভজনক বর্ষার ফসল— সিকৃবি-১ শিম।