মাইলস্টোন ট্রাজেডি: শোকে স্তব্ধ বন্ধুরা

১ দিন আগে
মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে অনেকেই হারিয়েছেন সন্তান, কোনো পরিবার হারিয়েছেন একাধিক সদস্যও। কেউ আবার ছোট্ট বন্ধুকে হারিয়ে স্তব্ধ। ‎সন্তানের শোকে পাগলপ্রায় মা বাবার আর্তনাদ কাঁদিয়েছে আশপাশের সবাইকে। কেউবা শোকে হয়েছেন স্তব্ধ, ভাষাহীন নির্বাক।

পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ। মেয়েকে চিরবিদায় জানানোর একদিন পরই ছেলেকে শেষবারের মতো দেখা। শুভ্র কাফনে জড়িয়ে পরপারে যাচ্ছে মানিকজোড়।


‎বড় মেয়ে নাজিয়া চলে যাবার ঠিক একদিন পর আগুনে পোড়া তীব্র যন্ত্রণা থেকে চিরদিনের মতো ছুটি নিয়েছে আদরের ছোট সন্তান নাফি। অসীম বিষাদ আর বুক ভরা আর্তনাদে অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে বাবা জানালেন শেষ বিদায়।


হৃদয় ভাঙা ঘটনার দিন শেষবারের মতো নাফির সঙ্গে খাবার খেয়েছিল বন্ধু রেদোয়ান। পাশাপাশি বসে টিফিন সেরে ‎দৌড়ে ক্লাসের দিকে ছুটেছিল দুই বন্ধু। জীবনের শেষ দৌড়ে জিতে যাওয়া বন্ধু নাফিকে চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যাবার মুহূর্তটুকু কিছুতেই ভুলতে পারছে না রেদোয়ান।


রেদোয়ান বলে, ‘আমি বলেছি যাস না। দাঁড়া আমি আসতেছি। ও আগে গিয়ে ওখানে দাঁড়িয়ে পড়ল। তখন একটা বিকট শব্দ হলো। দেখি একটা ফাইটার জেট ওইখানে পড়ছে। নাফি তুই কই। ওইখানে অনেক মাংস, রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমি ভাবলাম নাফি মনে হয় শেষ, আর নেই।’


আরও পড়ুন: মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত: মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে হটলাইন চালু



কবরের ভেজা মাটি শুকাবে, আগরের গন্ধও মিলিয়ে যাবে কদিন পর। থেকে যাবে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। বন্ধু হলেও ভাইয়ের চেয়ে কম ছিল না তিন বন্ধুর সঙ্গে তানিমের সম্পর্ক। আরিয়ান, বাপ্পী ও হুমায়েরকে হারিয়ে শোকে বিহবল তানিম।


সে বলে, আরিয়ান, বাপ্পীর সঙ্গে কত ব্যাটমিন্টন, লুকোচুরি খেলা খেলেছি। 



‎সন্তানের শোকে বিহ্বল পরিবারগুলো। পাগলপ্রায় মা বাবার আর্তনাদ কাঁদিয়েছে আশপাশের সবাইকে। কেউবা শোকে হয়েছেন স্তব্ধ, ভাষাহীন নির্বাক।


এক শিশুর অভিভাবকরা বলেন, আমাদের সন্তান চলে গেছে। তাকে তো আর ফেরত পাব না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।


‎উত্তরায় একই এলাকার ঠিক পাশের গলিতেই থাকতো দুই বান্ধবী সায়মা ও ফাতেমা৷ হাসি আনন্দে খেলায় মেতে যে পথে ছুটে বেড়াতো তারা, সে পথে আজ শুনশান নীরবতা।


ফাতেমার মা বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারছি না। ঘরেও থাকতে পারছি না। বাইরেও থাকতে পারছি না। সব সময় মেয়েটা এখানেই খেলা করতো।


‎নিজ হাতে ধ্বংসস্তূপ থেকে দগ্ধ শিশুদের বের করে আনা ইব্রাহিমের আতঙ্কের ঘোর কাটেনি এখনও।
‎ইব্রাহিম বলেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ বের করেছি। পুড়ে লাশে নাড়িভুড়ি বের হয়ে গেছে। 
 

এমন বীভৎস দিন যেন আর কখনও না আসে, মানুষ যেন নিরাপদে থাকে, সে কথাই বলছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীসহ অন্যরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন