মরুর ‘সাম্মাম’ চাষ হচ্ছে পটুয়াখালীতে

৩ সপ্তাহ আগে
মরু অঞ্চলের ফল সাম্মাম। রসালো ও খেতে মিষ্টি এই ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষে সাড়া ফেলেছেন পটুয়াখালীর ব্যাংক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জুয়েল। দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফল চাষ করে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। বেশ লাভবানও হচ্ছেন।

সুস্বাদু ,মিষ্টি  ও রসালো ফল খেতে সবাই ভালোবাসে। যদি সেই ফলে থাকে পুষ্টিগুণ ভরপুর আর নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের তাপমাত্রাকে তাহলে তো কথাই নেই। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের এমনই এক ফল সাম্মাম। এর চাষ হয় সাধারণত মরু অঞ্চলে।

 

আর এই ফল দেশের মাটিতে চাষ করে বাজিমাত করেছেন পটুয়াখালীর কৃষি উদ্যোক্তা ও ব্যাংক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জুয়েল।

 

ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৫ বিঘা  জমিতে দুই জাতের সাম্মাম চাষ করে প্রায় ৫ টন ফল উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। ইন্টারনেটে সাম্মাম চাষের ভিডিও দেখে উৎসাহিত হয়ে এবং জেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও সহযোগিতা নিয়ে তিনি সাম্মাম ফলের চাষ শুরু করেন।

 

পটুয়াখালী শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে আউলিয়াপুরে সাম্মাম ফলের চাষ করেন জুয়েল। ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও অবসর সময়ে সাম্মাম চাষে সময় দিয়েছেন তিনি।


আরও পড়ুন: সাম্মাম চাষে সামসুলের তাক লাগানো সাফল্য

 

সাম্মাম সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল। এরইমধ্যে সাম্মাম এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ সবুজ আর ভেতরে লাল। আরেক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ হলুদ আর ভেতরে লাল।

সাম্মাম ফল পাইকারি ১৫০ এবং খুচরা ১৭০ টাকায় বিক্রি করছেন জুলেন। ছবি: সময় সংবাদ 

তবে দুই ধরনের ফলই খেতে মিষ্টি, সুস্বাদু ও সুগন্ধযুক্ত। এ ফলটি জমির মাটির মধ্যে ও মাচা তৈরি করে চাষ করা যায়। দেড় মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ব হয় সাম্মাম।

 

এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা অনেকেই নতুন জাতের রসালো ফলটি কিনতে ও চাষ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে এসে ভিড় করছেন জুয়েলের বাগানে।  

 

প্রতি কেজি সাম্মাম ফল পাইকারি ১৫০ এবং খুচরা ১৭০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি।

 

কামরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজের প্রতি ছিল আমার একটি শখ আর এই শখ থেকেই অবসরে কৃষি কাজ করা। সাম্মাম চাষ কতটা সম্ভব হয় এই অঞ্চলে তা দেখতে এই ফলের চাষ করি। প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। দেশে বাণিজ্যিক ভাবে এই ফল চাষ করতে পারলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল খেতে বেশ সুস্বাদু। বাংলাদেশের মানুষ এই ফলকে সাদরেই গ্রহণ করবে দেখতে পাচ্ছি।’

 

 আরও পড়ুন: মরুর সাম্মাম এখন মৌলভীবাজারে

 

আউলিয়াপুর  ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখছি উনি এই ফলটি চাষ করে যাচ্ছেন। আমারও ইচ্ছা আছে এই ফল চাষ করার। তাই পরামর্শ নেয়া ও দেখার জন্য এসেছি।’

 

একই ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন বলেন, ফলটি দেখতে সুন্দর এবং এর চাহিদা বেশি থাকায় আমার এই ফলটি চাষের আগ্রহ রয়েছে এবং ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি আগামীতে চাষ করতে পারব।

 

পটুয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জালাল বলেন, ‘সাম্মাম চাষে শুরু থেকেই আমরা সার্বিকভাবে জুয়েলকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। কিভাবে চাষ করবে কোন সময় দিতে হবে ফল কাটবে এভাবে পরামর্শ দেই।’

 

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যদি সাম্মান চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে আমরা তাকে সহযোগিতা করব।’

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন