ময়মনসিংহের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা

২ সপ্তাহ আগে
নানা অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত ময়মনসিংহ বিভাগের বেশিরভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জনবল সংকট, অবকাঠামো সমস্যার সঙ্গে রয়েছে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগও। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বাধ্য হয়ে তাদের যেতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে।

জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা থেকে প্রেসক্রিপশন করা, যার সবকিছুই করছেন একজন ব্যক্তি। তিনি সাব এসিস্ট্যান্ড কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। সার্বক্ষণিক আবাসিক মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও সকাল ৯ টায়ও দেখা নেই তার। ৮ টা থেকে বহির্বিভাগে রোগীদের দীর্ঘ সারি থাকলেও সাড়ে ৯ টা পার হলেও আসেননি কোনো চিকিৎসক। আর তালাবদ্ধ দেখা যায় এক্সরে কক্ষ ও প্যাথলজি ল্যাব। 


ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সময় সংবাদের ক্যামেরায় ধরা পরে এমন সব চিত্র। রোগীদের রয়েছে নানা অভিযোগ।


কথা হয় সেখানকার রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, নামেই শুধু সরকারি হাসপাতাল কিন্তু তেমন কোনো সরকারি সুবিধাই পাওয়া যাচ্ছে না। সব পরীক্ষা করতে হয় বাইরে থেকে। ওষুধও কিনতে হয় বাইরে থেকে। ডাক্তার আসার কথা সকাল ৮ টা কিন্তু ১০ পর প্রতিদিন আসেন তারা আবার দুপুর হতেই চলে ‍যান।

আরও পড়ুন: বর্ষায় কী নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি?

এ অবস্থা শুধু গৌরীপুরই নয়, জেলার বেশিরভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসক সংকটও রয়েছে প্রকট। ২৩৯ টি পদের বিপরীতে ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন ১৬১ জন।


নেত্রকোনা জেলার দশ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোর বেহাল দশা। জনবল সংকটসহ পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, অ্যাম্বুল্যান্স, টেকনিশিয়ানসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই ওষুধ। বারহাট্টায় নতুন ভবন নির্মাণ হলেও পুরনো ভবনেই চলছে কার্যক্রম। মদনে পুরনো ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও হচ্ছে না নতুন ভবন।


নানা অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত ময়মনসিংহ বিভাগের অন্য দুই জেলা জামালপুর ও শেরপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোও। কোথাও কোথাও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স, কোনটাতে আবার নেই চালক। এক তৃতীয়াংশ জনবল দিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে হাসপাতালগুলোকে। অভিযোগ রয়েছে- ওষুধ কেনা থেকে শুরু করে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় বাইরের ক্লিনিক বা ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে। সেইসঙ্গে নোংরা পরিবেশ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নষ্ট লাইট-ফ্যান, রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক ও নার্সদের দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রোগী-স্বজনদের।

আরও পড়ুন: বিদায়ী বছরে ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখল দেশ

জনবল সংকট দূর হলে সেবার মান বাড়বে বলে আশা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. প্রদীপ কুমার সাহার। তিনি বলেন, কর্মকর্তার। বলছেন, সমস্যা-সংকট সমাধানে কাজ করছেন তারা। সেইসঙ্গে ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আশা করি সংকট থাকবে না।


প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষদের ‍স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আরও দায়িত্বশীল ও আন্তরিক হবেন, এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন