ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর যে স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত ট্রাম্প নিয়েছেন, তার মাশুল দিতে হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের। ইরানের ঘোষণায় এ বার্তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার জাল বিস্তৃত করতে যে অসংখ্য সামরিক ঘাঁটি ওয়াশিংটন তৈরি করেছে, এবার তাদের লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।
মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত ১৯টি স্থানে মোতায়েন আছে মার্কিন সেনা, যার মধ্যে ৮টি স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি। এর মধ্যে কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, ইউএই ও ইরাকের ঘাঁটিগুলো ইরানের ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে। যা দেশটির ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি টার্গেটে পরিণত হতে পারে। ইরানের ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সামরিক ঘাঁটি নেই, তবে পার্শ্ববর্তী প্রায় প্রতিটি দেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি এখন উচ্চ সতর্কতায়।
আরও পড়ুন: হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট: রিপোর্ট
কাতারের আল-উদেইদ এয়ার বেস, ইরান সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ঘাঁটি, যেখানে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার সেনা, স্যাটেলাইট কন্ট্রোল সিস্টেম, ড্রোন, বোমারু ও রিফুয়েলিং বিমান এবং এটি ইউএস সেন্টকমের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-ধাফরায় আছে এফ-২২ স্টিলথ ফাইটার ও রিকনেসান্স ড্রোন।
বাহরাইনের নেভাল সাপোর্ট অ্যাক্টিভিটি ঘাঁটি ইরান উপকূল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে। এই ঘাঁটিতে মোতায়েন আছে ৯ হাজার মার্কিন নৌসেনা ও কর্মী, যা মার্কিন ফিফথ ফ্লিটের সদর দফতর এবং উপসাগরীয় নৌপ্রতিরক্ষার প্রধান কেন্দ্র। এখানে অবস্থান করছে যুদ্ধজাহাজ, মাইনসুইপার ও ফাস্ট রেসপন্স কাটার।
কুয়েতের ক্যাম্প আরিফজান, ইরান সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে এবং এটি মার্কিন সেনাবাহিনীর লজিস্টিক ও কমান্ড হাব। এই ঘাঁটিতে আছে মজুদ সরঞ্জাম, ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও যুদ্ধ পরিকল্পনা ইউনিট। পাশের আলি আল-সালেম এয়ারবেস থেকে পরিচালিত হয় এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন মিশন ও এয়ারলিফট অপারেশন।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাব কীভাবে দিতে পারে ইরান?
সিরিয়াতেও আছে ছোট আকারের ঘাঁটি, যা ব্যবহার হচ্ছে আইএসবিরোধী অভিযানে।
ইরাকের আল-আসাদ ও এরবিল ঘাঁটি ইরানের পশ্চিম সীমান্ত থেকে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কিলোমিটার দূরে, যেখানে অবস্থান করছেন প্রায় ৫ হাজার মার্কিন সেনা। এই ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করা হয় বিমান অভিযানে সহায়তা, আইএসবিরোধী মিশন, এবং আঞ্চলিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে। অতীতে ইরান এসব ঘাঁটিতে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
]]>