ভোলাগঞ্জ কি আগের রূপে ফিরবে?

৪ ঘন্টা আগে
প্রকাশ্যে হরিলুটের পর চাইলেও কি আগের রূপে ফেরানো সম্ভব ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর? পাথর পুনঃস্থাপনে যেমন ধীরগতি রয়েছে, তেমনি কতটা টেকসই হবে তা নিয়েও আছে সংশয়। পরিবেশকর্মীরা মনে করেন, কৃত্রিম উপায়ে ভোলাগঞ্জকে আগের রূপে ফেরানো সম্ভব নয়। কেবল প্রকৃতিই পারে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরকে স্বরূপে ফেরাতে। আর সেজন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে কোনো এক ঢলে উজান থেকে আসা পাথরের।

সিলেটের গ্রামেগঞ্জে, পথের ধারে, ঝোঁপঝাড়ে পাথর আর পাথর। কোথাও মাটি খুঁড়ে, কোথাও পাতা সরিয়ে মিলছে লুটপাটের পর লুকিয়ে রাখা মূল্যবান এই খনিজ সম্পদ। এত এত পাথর কীভাবে এলো লোকালয়ে, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়রা। অবশ্য কারও কারও দাবি, রাতের আঁধারে ফেলে রাখা হয় এসব পাথর।

 

লুটপাটের পাথরের খোঁজে চলছে প্রশাসনের টানা অভিযান। উদ্ধারের পর ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর ফেলা হচ্ছে আগের জায়গায়। তবে সেই গতিও অতি মন্থর। দেড় কোটি ঘনফুটের বেশি পাথর লুটের বিপরীতে সোমবার (১৮ আগস্ট) পর্যন্ত সন্ধান মিলেছে মাত্র প্রায় ৪ লাখ ঘনফুট। আর পুনঃস্থাপন এখনো হাজার ঘনফুটের ঘরে।

 

কিন্তু পাথর পুনঃস্থাপনের এ উদ্যোগ টেকসই হবে কতটা? পরিবেশকর্মীরা বলছেন, এ উপায়ে চাইলেও ভোলাগঞ্জকে আগের রূপে ফেরানো সম্ভব নয়। কেবল প্রকৃতিই পারে এর সমাধান দিতে। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরেকটি পাথরের ঢলের জন্য। কিন্তু এটিও আসে না প্রতি বছর। এমনকি প্রতিস্থাপনের কাজ দায়সারা গোছের হলে, সেটাও হতে পারে আরেক বিপদের কারণ।

 

আরও পড়ুন: পাথর লুট: পরস্পরকে দোষারোপ করছে রাজনৈতিক দলগুলো, কী বলছেন বিশ্লেষকরা

 

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, 

পাথর পুনঃস্থাপন নামে নতুন শব্দ আবিষ্কার হয়েছে। আমরা কখনও এই শব্দের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না! এখন অবশ্যই আমাদেরকে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে যে কখন আবার পাথর আসবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘পাথরগুলো কতদিন এখানে রাখা যাবে, সেটা একটা ব্যাপার। আর সেগুলো রাখা গেলেও মানুষের জন্য আরও বিপদজনক হয় কিনা, সেটাও একটা বিষয়। কারণ এই পাথরগুলো মাটি বা বালির সঙ্গে মিশবে না। কারণ আপানি এগুলো ফেলে দিলেন, কিন্তু সেগুলো তো নিজের মতো করে জায়গা নিতে পারবে না। এটা সময় লাগবে।’  

 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক কাসমির রেজা বলেন, ‘প্রতি বছর ঢলে পাথর আসে না। পাথর আসে কোনো কোনো বছর। যেমন ১৯৯০ সালে ঢলে পাথর খুব বেশি পাথর এখানে এসেছিল। এখন আমরা অপেক্ষায় থাকবো, কিন্তু সেই অপেক্ষা আসলেই সুফল বয়ে আনবে কিনা!’  

 

আরও পড়ুন: পাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশ বা নীরবতা ছিল: রিজওয়ানা

 

সিলেটের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পদ হারানোর আগে শের মাহবুব মুরাদ সময় সংবাদকে জানান, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে নেয়া হবে পদক্ষেপ।

 

ডিসি বলেন, 

পুনঃস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। কিন্তু এটা একটা সময় সাপেক্ষ বিষয়। সব সময় এক রকম দেখা যাবে না। যেভাবে এগুলো রিপ্লেস করা হচ্ছে, তাতে আসলে আগের রূপে ফিরে আসবে কিনা-- সেজন্য বিশেষজ্ঞদের মতামত দরকার। আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবো।  

 

তবে পাথর প্রতিস্থাপন যেন আবার অর্থ লুটের আরেক প্রকল্পে রূপ না নেয়, সেই বিষয়েও সতর্ক করছেন অনেকে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন