ভূমি অধিগ্রহণের বেড়াজালে বন্দি রংপুরের ৪ অর্থনৈতিক অঞ্চল

৩ সপ্তাহ আগে
বরাদ্দ বৈষম্যের শিকার হয়ে রংপুর বিভাগে শুধু দরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বাড়েনি, বেড়েছে কর্মহীন মানুষও। দীর্ঘদিনেও হয়নি কাঙ্ক্ষিত শিল্পায়ন। ফলে কৃষির ওপর নির্ভর করে চলছে উত্তরাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর অর্থনীতি। বিগত সরকার চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিলেও আটকে কার্যক্রম আছে ভূমি অধিগ্রহণে। অথচ একই সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। অর্থনীতিবিদদের মতে, উন্নয়ন বৈষম্য দূর করতে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।

একমাত্র উত্তরা ইপিজেড ছাড়া দীর্ঘ সময়ে রংপুর অঞ্চলে গড়ে ওঠেনি ভারী কোনো শিল্প কলকারখানা। এখনও এই অঞ্চলের শিল্প আটকে আছে কিছু চালকল, পাট ও ক্ষুদ্র শিল্পে। ফলে বিভাগের ৭০ শতাংশ মানুষকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

 

বিগত সরকার দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও রংপুর অঞ্চলে সেই দৃশ্য প্রতিফলিত হয়নি। এই অঞ্চলে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন পেলেও আটকে আছে ভূমি অধিগ্রহণেই। অথচ একই সময়ে শুরু হওয়া ঢাকা ও চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।

 

আরও পড়ুন: গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তে বাতিল ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চল: বিডা চেয়ারম্যান

 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য হয়েছে, তার শিকার হয়েছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

 

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ২৫০ একর জমির মধ্যে ১৮৫ একর সরকারি খাস জমি। বাকি ৬৫ একর জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি। যেগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে সরকারের নিয়মানুযায়ী। এই অর্থ সরকারের কাছ থেকে পাওয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।

 

ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, সম্ভবনা থাকার পরও বিগত সরকারের বৈষম্য নীতি প্রতিফলিত হয়েছে এই অঞ্চলে। বর্তমান সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ তাদের। দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গত সরকারের আমলে মন্ত্রী-এমপিরা উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

 

পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সহ- সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবলা বলেন, উত্তরাঞ্চলের কৃষি পণ্যের প্রসারে এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুত গড়ে তোলা দরকার।

 

আরও পড়ুন: বিনিয়োগ আর্কষণে শিগগিরই নতুন জ্বালানি নীতি প্রকাশ: বিডার চেয়ারম্যান

 

শিল্পায়নে এগিয়ে নিতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া জরুরি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সাফুদ্দীন খালেদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষ বেশিরভাগ কৃষি নির্ভর। এখানে ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

এদিকে দিনাজপুরে ৩০৮ একর জমির মধ্যে অধিগ্রহণ হয়েছে মাত্র ৮৭ একর। এছাড়া পঞ্চগড়ে ২৫০ একরের মধ্যে ১৮৭ একর ও নীলফামারীতে ১০৬ একর জমি বেজার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আর কুড়িগ্রাম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ১৪৯ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন