বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) ও The Federal Institute for Geosciences and Natural Resources (BGR) জার্মানির যৌথ আয়োজনে আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে অংশ নেন দেশের শীর্ষ ভূবিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিকল্পনাবিদ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. ফাওজুল কবির খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, জার্মান রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. আখিম ট্রস্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অনারারি প্রফেসর ও বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক সমিতির সভাপতি ড. বদরুল ইমাম।
সভাপতিত্ব করেন জিএসবির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) এস. এম. মইন উদ্দিন আহমেদ এবং সেমিনার আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জিএসবির পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মো. আশরাফুল কামাল।
সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, জিওলজিস্ট, সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এবারের সেমিনারের আলোচ্য ১৫টি মূল থিম:
১. চতুর্থ পর্যায়ের ভূতত্ত্ব ও ব-দ্বীপ গঠনের প্রক্রিয়া
২. খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান
৩. টেকসই শক্তি ও বিদ্যুৎ
৪. উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নগরায়নে প্রকৌশল ভূতত্ত্ব
৫. ভূ-দুর্যোগ, পরিবেশগত সমস্যা ও প্রতিকার
৬. জলবায়ু পরিবর্তন: সমস্যা, প্রতিকার এবং সহনশীলতা
৭. হাইড্রোজিওলজি, ভূ-রসায়ন ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা
৮. ব্লু ইকোনমি, উপকূল ও সামুদ্রিক ভূতত্ত্ব
৯. বেঙ্গল বেসিনের গঠনগত ভূতত্ত্ব ও টেকটনিক
১০. স্তরবিন্যাস ও জীবাশ্ম স্তরবিন্যাস
১১. শিলাবিদ্যা ও খনিজবিজ্ঞান
১২. অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূ-ভৌতিক প্রয়োগ
১৩. টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনায় ভূ-স্থানিক বিশ্লেষণ
১৪. সামাজিক ভূতত্ত্ব ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)
১৫. ভূ-পর্যটন, ভূ-ঐতিহ্য ও সংরক্ষণ
আলোচনায় উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহের মধ্যে:
১. দেশের গ্যাস, কয়লা, কঠিন শিলা ও খনিজ সম্পদের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা
২. ভূতাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা
৩. ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস ও নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনায় ভূতত্ত্ববিদদের করণীয়
৪. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে পাহাড় ধস, নদী ভাঙন, ও ভূমিক্ষয় বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি ভূতাত্ত্বিকভাবে সম্ভাবনাময় দেশ, তবে এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে গবেষণাভিত্তিক পরিকল্পনা এবং নীতিনির্ধারণ অপরিহার্য।
জার্মান রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে ভূতত্ত্বভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্পে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তার আশ্বাস দেন।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী গবেষকরা মনে করেন-ভূতত্ত্ব শুধু একটি একাডেমিক শাখা নয়, বরং এটি হতে পারে একটি দেশের উন্নয়নের শক্ত ভিত।