শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মোহনপুর উপজেলার এমন ঘটনা ঘটে।
মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, তখন দুপুর একটা। ফায়ার সার্ভিসে খবর যায় মোহনপুর উপজেলার বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন লেগেছে। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রওয়ানা হন ১টা আট মিনিটে বিষহারার উদ্দেশ্যে। আবার দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে আরেকটি খবর আসে একই উপজেলার বিদ্যাধরপুরে পানের বরজে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। ততক্ষণে ৫ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে বিষহারর পথে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলে গেছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দেখে চায়ের স্টলে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এরপরে অভিযোগ আসা মুঠোফোনে কল করা হলে রিসিভ করে তিনি জানান, ‘ইট বিছানো রাস্তায় একটু গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের বসতবাড়িতে আগুন।’ সেখানে গিয়েও আগুন দেখতে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বুঝতে পারে তাদের দেয়া হয়েছে ভুল তথ্য। পরে ওই নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এমন বিভ্রান্তিতে বিদ্যাধরপুরের চার চাষির এক বিঘারও বেশি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো কৃষকের বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস থেকে বিদ্যাধরপুর দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার। আর ফয়ার সার্ভিস থেকে পূর্বদিকে ৯ কিলোমিটার বিষহারা এলাকার দূরুত্ব। আর বিষহারা থেকে ফিরে ফায়ার সার্ভিসে হয়ে বিদ্যাধরপুরের দূরুত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার।
বিদ্যাধরপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা বলছেন, পানের বরজে আগুনের বিষয়টি প্রথমে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়- বিষহারা এলাকায় আগুনের বিষয়টি। জানানো হয় সেখান থেকে আগে খবর পাওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিষহারায় গিয়েছে আগুন নেভাতে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসী আগুন নিভিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসলে এতো ক্ষতি হতো না।
পানের বরজ মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুর বেলা সবাই নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসময় পানের বরজে আগুন লাগে। স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে নেভানোর চেষ্টা করেছে। যে যেভাবে পেড়েছে আগুন নেভানোর কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিস আসলে ক্ষতির পরিমাণ কম হতো। আসলে পানের বরজে আগুনের ঘটনাগুলোর কারণ জানা যায় না। তেমন কেউ অভিযোগও করে না। এমনভাবেই থেকে যায় শেষ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: কয়েলের আগুনে বাস পুড়ে ছাই, ঘুমিয়ে থাকা হেলপারের মৃত্যু
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যাধরপুর গ্রামের শিমুল আহমেদ, বেলাল হোসেন, আয়ুব আলী ও নজরুল ইসলামের যৌথ মালিকানাধিন প্রায় ৩৫ শতাংশ জমিতে পানের বরজে আগুন লেগে পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।
এ বিষয়ে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার নুরুল ইসলাম বলেন, আগুন লেগেছে এক এলাকায়, আর আমাদের ফোন করে অন্য এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে। যিনি এই কাজটা করেছেন তিনি জেনে বুঝেই করেছেন। বিষয়টি আমরা উর্ধ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবুও সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।