নিষেধাজ্ঞাকালীন জেল-জরিমানা এড়াতে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ফিশিং ট্রলার সাগর থেকে ঘাটে ফিরে এসেছে। জেলেরা জানান, মার্চ ও এপ্রিল—জাটকা সংরক্ষণের জন্য মেঘনা ও তেতুলিয়ায় ছিল মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। তার মধ্যেই আবার বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা তাদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে। ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে অনেককেই।
তবে জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে মৎস্য বিভাগ। তাদের দাবি, প্রতিবছর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে উপার্জনের সুযোগ সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এর ফলে জেলেদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে।
এ সময়টি সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ সময় ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ উপকূলবর্তী এলাকায় উঠে এসে প্রজনন করে। সেই প্রজনন নিরাপদ করতেই প্রতিবছর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে মৎস্য বিভাগ।
আরও পড়ুন: দুয়ারে পহেলা বৈশাখ, ইলিশ ছোঁয়ার সাধ্য নেই!
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রজননকালে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে পরবর্তী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এ কারণেই প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
পূর্বের তুলনায় এবার কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে এবার ৫৮ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাশের দেশ ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে দেখা গেছে, বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ভারতের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে যেত এবং ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করত। এতে বাংলাদেশের জেলেরা কোনো সুফল পেত না। কিন্তু এবার দুই দেশের নিষেধাজ্ঞা একই সময় চলবে, ফলে এসব অভিযোগ থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সমন্বিত উদ্যোগ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও মাছের প্রজননের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
]]>